মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
ঘটনাটি খুবই লজ্জারÑ নেদারল্যান্ডসের রাষ্টদূত লিওনি মারগারেথা কোয়েলিনেয়ারের হাতব্যাগ চুরি হয়েছে। এ লজ্জা রাষ্ট্রদূতের নয়, লজ্জা আমাদের। লজ্জা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। প্রচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি হিসেবে গিয়ে হাত ব্যাগ খুইয়েছেন নেদার্যান্ডের রাষ্ট্রদূত। পরবর্তীকালে ওই হাত ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে কিনা, তা জানা যায়নি। কিন্তু এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তো বটেই দেশের নাগরিক হিসেবে বিবিকবান প্রতিটি মানুষই বিব্রত হবে এটাই স্বাভাবিক। দৈনিক সোনার দেশে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভেতরে উন্মুক্ত স্থানে সোমবার বিকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনাকাক্সিক্ষত ওই ঘটনাটি ঘটে। কাউন্টার ফটোর আলোকচিত্র বিভাগের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে আসেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্টদূত।
চারুকলা অনুষদের ডিনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রদূতের ব্যাগে তার মোবাইল ফোন ও নোটপ্যাডসহ মূল্যবান জিনিস ও নথিপত্র ছিল।
ওই অনুষ্ঠানের সময় টেলিভিশন ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্য থেকে সন্দেহভাজন এক তরুণকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার পরিচয় এখন পাওয়া যায়নি। ব্যাগটি বুধবার উদ্ধার করা হয়েছে এবং এর সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেফকার করেছে পুলিশ। তবে গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় প্রকাশ করো হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি সচেতন মানুষের সমাবেশে সবার নজর এড়িয়ে হাত ব্যাগ চুরির ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি যে ক্ষুণœ হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, যাঁর হাতব্যাগ চুরি গেছে তিনিও হতবাক হয়েছেন, বিব্রত হয়েছেন। হয়ত চোর ধরা পড়বে, ব্যাগও উদ্ধার হয়েছে কিন্তু লজ্জার কলঙ্কটি থেকেই যাবে। আর চোর যদি ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী হয়- তা হলে তো মাথা হেট করা ছাড়া আর কিই বা থাকবে। আশা করি তেমনটা যাতে না হয়।
চুরির যাওয়ার ঘটনার দায় আয়োজক গোষ্ঠি কীভাবে অস্বীকার করবেন যে, তাদের আয়োজনে নিরাপত্তার ব্যাপারটি মোটেও গুরুত্ব পায় নি। চুরির ওই ছোট্ট ঘটনাটিই সাক্ষ্য দেয় যে, ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির নিরাপত্তাকে সে ভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। একটি দেশের রাষ্ট্রদূত অতিথি থাকবেন অথচ তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি ভাবা হবে নাÑ এটা কেমন উদাসীনতা?. আয়োজকরা বিদেশি মেহমানদারিতে এ ধরনের গাফলতি দেখিয়েও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনো ওই অর্থে স্থিতিশীল নয়Ñ বরং যে কোনো অজুহাতে দেশকে অস্থিতিশীল করার নানা ঘটনা আমরা লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলারও নজির রয়েছে। এমনই একটি পরিস্থিতিতে আয়োজকরা এতোটা উদাসীন থাকলেন কী করে?
চুরির এই ঘটনা নিশ্চয় সকলের জন্যই সতর্কবার্তা দিয়েছে। যে কোনো আয়োজনে নিরাপত্তার সামান্য ত্রুটিও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্ম দিতে পারে। ভবিষ্যতে তেমনই সতর্কতা অবলম্বন করেই অনুষ্ঠান আয়োজন করা যথার্থ হবে।