শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক
‘রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ সর্বস্তরের আওয়ামী সন্ত্রাসী ও এর কুশীলবদের বিচার এবং নিষিদ্ধ করা এবং লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি’ জানিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, বর্তমান রাষ্ট্রপতি অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছে। সে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দালাল। তাকে অতিদ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। আওয়ামী লীগ এই দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখে না। এছাড়াও বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তার আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, শাহাবুদ্দিন চুপ্পু শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র না পাওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা দ্বারা কি ইঙ্গিত করাতে চাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পারছি। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোনো অবস্থাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র হতে দেওয়া হবে না। চুপ্পু পদত্যাগ না করলে আমরা বঙ্গভবন ঘেরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করবো। তারা যে কুমিল্লা সীমান্তে এক হয়ে এই দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেই অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া যাবে না। আমাদের ২০০০ এর অধিক শহীদ হয়েছে, প্রয়োজনে লাখের অধিক শহীদ হবো। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার এই দেশের মাটিতে পা রাখতে পারে না। কোনো অবস্থাতে আওয়ামী লীগ এই দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখে না।
তিনি আরও বলেন, অতিদ্রুত ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধে করতে হবে। যদি ছাত্রলীগের নিষিদ্ধের দাবিতে প্রথম শহীদ হতে হয়, সে শহীদ যেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যদি প্রথম কাউকে শহীদ হইতে হয়, সেটা যেন মেহেদি সজীব এর নাম হয়। এই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ না করে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে আমাদের নয় দফা বাস্তবায়ন না করে এই বিপ্লব ক্ষান্ত হতে পারে না।
রাবির সমন্বয়কদের অন্যতম উপদেষ্টা রাশেদ রাজন বলেন, বিপ্লবী সরকার গঠনের পরও আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখছিনা। বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ যে ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ১৪০০ এর অধিক শহীদ ও ৩০ হাজারের অধিক আহত হওয়ার পরও ছাত্রলীগকে জাতীয়ভাবে নিষিদ্ধ করছেনা। আমরা সহিংস ক্যাম্পাস আর দেখতে চায়না।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ বাদে বাংলাদেশে অন্য যে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো আছে, সে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। আমরা চাই নতুন সরকার গঠন হোক। আমাদের যে সংবিধান রয়েছে তা আওয়ামী সরকারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। এই সংবিধান সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার নিয়ে মানুষের যে আগ্রহ ছিলো, তারা তা শক্তভাবে ধরে রাখতে পারেনি। এই সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা নিয়ে অনেক প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে৷ যেমন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের মাঝে একটা স্বজনপ্রীতি কাজ করে৷ সবকিছুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক হচ্ছে৷ আমরা কেন্দ্রীয়করণ থেকে বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টি দৃশ্যমান দেখছিনা।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নিয়োগসহ বিভিন্ন নিয়োগ ঢাকা কে কেন্দ্র করেই হচ্ছে৷ আমরা যেই স্বপ্ন নিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মান করলাম সেই স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এই সরকারের তেমন কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছেনা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির অন্য সমন্বয়করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।