রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২৪, ১১:০০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইন প্রণয়ন করা কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইনের সুরক্ষা দেয়ার কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। যারা আইনকে প্রয়োগ করার কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। দুর্নীতি আমরা যদি দূর করতে না পারি তাহলে অনেক সম্ভাবনাই কার্যকরী হবে না।’



বুধবার (৯ অক্টোবর) রাজশাহীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থা শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। রাজশাহী মহানগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় রাজশাহীর স্থানীয় অর্থনৈতিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সার্বিক অবস্থার নানা অভিযোগ ও পরামর্শ শোনেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
পাচার হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত আনার দাবি জানিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এতদিন দেশের ভেতরে যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের শাস্তি দিতে হবে। যদি তাদের দৃশ্যমান শাস্তি না হয়, তাহলে আগামী দিনে দুর্নীতি বন্ধ করার যে নীতিগতভাবে নজরদারির কথা বলছি সেটা সম্ভব হবে না। দুর্নীতি আমাদের এক নম্বর শত্রু।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি বিগত সময়ে সচিবরা কীভাবে ব্যবসায়ী হয়ে গেলেন এবং ব্যবসায়ীরা কেমন করে রাজনীতিবিদ হয়ে গেলেন। অনেকে মনে করেন, কেবল ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ হননি, রাজনীতিবিদরাও ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন।’

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এবং সিপিডির সিনিয়র ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

জনশুনানিতে শিক্ষক-ছাত্র, এনজিও কর্মী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৪০ জন অংশ নেন। যাদের মধ্যে জনশুনানিতে আলোচনায় অংশ নেন ১২৫ জন। তারা সব ক্ষেত্রের দুর্নীতি দূরীকরণ, বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা, রাজশাহীতে কৃষি ভিত্তিক শিল্পায়ন গড়ে তোলা, গ্যাস সংযোগ প্রদান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কমানোসহ বিভিন্ন বিষয় সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এছাড়া, দুর্নীতি দূরীকরণে টেকসই রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং নির্বাহী বিভাগের দুর্নীতিরোধে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রদানেরও আহ্বান জানান।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ