রাস্তায় প্রতীকি পরীক্ষা ও বিষপান রামেবির নার্সিং শিক্ষার্থীদের

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ১:৩৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


সড়কে বসে ‘প্রতীকি পরীক্ষা’ ও ‘প্রতীকি বিষপান’ কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন চার শিক্ষার্থী।

এ কর্মসূচিতে রামেবি অধিভুক্ত সরকারি চারটি ও বেসরকারি ১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এছাড়া রামেবির রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ এবং বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ রাজশাহীস্থ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

গত বুধবার থেকে নগরীতে আন্দোলন করছেন তারা। গলায় রশি ঝুলিয়ে প্রতীকি ফাঁস দিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে পরীক্ষা গ্রহণে এক দফা দাবি থাকলেও বর্তমানে ৭ দাবিতে চলছে তাদের এ আন্দোলন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- স্থগিত হওয়া ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুই কার্যদিবসের মধ্যে যে কোনো কর্মকর্তাকে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য নির্বাহী দায়িত্ব প্রদান করতে হবে অথবা দুই কার্যদিবসের মধ্যে রামেবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে।

পরীক্ষা কমিটির সাথে সমন্বয় করে অভ্যন্তরীন ব্যবস্থায় পরীক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে হাসপাতালে আমাদের ইন্টার্নশীপ শুরু নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি কলেজসমূহে পরীক্ষার ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ বন্ধ করতে হবে। রামেবিতে পরীক্ষার রেজাল্ট চ্যালেঞ্জের ফি প্রতি সাবজেক্ট ৫ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করতে হবে।

রাজশাহীস্থ বেসরকারি নার্সিং কলেজের বিএসসি শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। রামেবির নার্সিং অনুষদে সেশনজট সৃষ্টি, পরীক্ষা বানচাল ও জটিলতার ঘটনায় সন্দেহভাজন ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অপসারণপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ৯ মাস পিছিয়ে আছি। কবে নাগাদ আমাদের পরীক্ষা হবে, কোনো নিশ্চয়তা আমরা পাচ্ছি না। সংশ্লিষ্টদের গাফেলতির কারণে চরম অনিশ্চয়তায় ২৩টি কলেজের প্রায় ৩ হাজার নার্সিং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।

এদিন বিএসসি চতুর্থ বর্ষের রিসার্চ-ইন-নার্সিং পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকেই ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শক (এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল) করা হয়। হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়।

এতে হতাশ হয়ে প্রতীকি বিষপান শুরু করেন পরীক্ষার্থীরা। এরপর সিংহভাগ পরীক্ষার্থীকে ফেল দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রতীকি পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এভাবেই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ফেল করানো হয়। আন্দোলনে দাবি আদায় হলেও ফলাফলে প্রভাব বিস্তারের শঙ্কায় তাদের আতঙ্কিত।

শিক্ষার্থী রায়হান আলী বলেন, যে সময়ে পড়ার টেবিলে বই-খাতা নিয়ে থাকতাম, হাসপাতালে ইন্টার্নশিপে গিয়ে রোগীদের সেবা করতাম; সেই সময়ে রোদ-বৃষ্টি ও অসংখ্য বাঁধা মোকাবেলা করে আন্দোলন করতে হচ্ছে আমাদের। দেওয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে যাওয়ায় রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে এসে দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে আছি। আমরা মানসিকভাবে দুশ্চিন্তায়।
তবে রামেবির ভিসি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ পদত্যাগ করায় এবিষয়ে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Exit mobile version