মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
প্রতিবাদ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের একাংশ
রাবি প্রতিবেদক:
সোমবার (৮ জুলাই) রেলপথ অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার (৭ জুলাই) বিকেলে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। একইসাথে সোমবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দেন তারা।
প্রতিবাদ সভায় কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন, রাবির অন্যতম সমন্বয়ক রেজওয়ান গাজি মহারাজ বলেন, সোমবার থেকে আমরা ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করবো। এজন্য সবার সহযোগীতা কামনা করছি। সোমবার (৮ জুলাই) সকাল এগারোটায় আমরা এখানে (প্যারিস রোডে) জড়ো হবো। এরপর আমরা এখান থেকে মিছিল নিয়ে গিয়ে রেললাইন অবরোধ করবো। তবে, সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা না করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করছি। আমাদের আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত আমরা লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে যাবো।
আরেক সংগঠক আমানুল্লাহ খান বলেন, ২০১৮ সালে আমরা কোটা বাতিল নয় সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেটা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখন সেই নির্দেশ যদি হাইকোর্টে না টিকে, তাহলে সেটার দায়ভার কার? আদালতের বিরুদ্ধে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার না থাকলেও, ওনারা নতুন করে আবার পরিপত্র জারি করতে পারেন। তাই, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ, আপনারা এমন পরিপত্র জারি করুন, যেটাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় হবে এবং কোনো আইনী জটিলতা থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আমানুল্লাহ খান আরো বলেন, আপনি বলেছেন, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে রাস্তায় কেনো? শিক্ষার্থীরা পড়তে চায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এর সমস্ত নিয়ন্ত্রণ আপনার কাছে। আপনি চাইলেই, আমাদের দাবি আদায় হবে, আমরা ক্লাসরুমে ফিরে যাবো। আপনার পিতাকে, তার কাছের লোকজনই হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলো। তেমনি আপনার কাছের কিছু লোকই আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার ষড়যন্ত্র করছে বলে আমরা মনে করি। নাহলে তারা আপনাকে দিয়ে এমন পরিপত্র জারি করাতো না, যেটা হাইকোর্টে টিকলো না।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এর মাঝেমাঝে দেশাত্মবোধক ও বিদ্রোহী গান এবং নাটক পরিবেশন করছেন তারা। এ সময় ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘১৮ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’সহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন বিভাগের পাচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৬ জুন থেকে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে, মানববন্ধন, সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করেছে তারা।