নিজস্ব প্রতিবেদক:রমজান মাস আসতে এখনও বাকি প্রায় দেড় মাস। এর আগেই রাজশাহীর বাজারে বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যর দাম। সরকারের মন্ত্রী ও সচিবদের হুঁশিয়ারির পরও কোনো পণ্যর দাম কমছে না। বাজারে বেড়েছে ডাল, ডিম ও সবজির দাম। চাল নিয়ে মন্ত্রীরা হুঁশিয়ারি করলেও এখনও দাম কমেনি।
নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ডাল বেড়েছে মসুর ডালের দাম। গত ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে এ ডালের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মতো বেড়েছে। দেশি বলে যে ডাল বিক্রি হচ্ছে, তার সর্বনিম্ন মূল্য দেখা গেছে কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা। বেড়েছে ছোলার দামও। গত এক মাস আগেও প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। এখন ওই ছোলার দাম ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একইভাবে বেড়েছে অ্যাঙ্কর ডালের দামও। এ ডাল দিয়ে মূলত বেসন তৈরি করা হয়। রোজার সময় বেসন খুব দরকারি পণ্য হয়ে ওঠে। বর্তমানে এর দাম কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা।
খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বলছেন, এখনও রোজার বাকি দেড় মাস। কিন্তু, বাজারে খেজুর, ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। আগামীতে দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা তাদের। এ পরিস্থিতিতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যদিও পণ্যের দাম দিনদিন বেড়ে যাওয়াকে অন্যভাবে দেখছেন বিক্রেতারা। রমজানকে লক্ষ্য রেখেই যে ধীরে ধীরে বাড়ছে।
বিক্রেতারা জানান, বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহে প্রতি লিটারে তিন থেকে চার টাকা বাড়ানো হয়েছে। এরপর থেকে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং পাম তেল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়, গত সপ্তাহের তুলনায় যা পাঁচ টাকা বেশি।
সাহেববাজারের খুচরা ব্যবসায়ীর আবদুস সালাম বলেন, কয়েকদিন থেকে আমাদের ডাল বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। বিশেষ ছোলা, মসুর, মুগের দাম বেড়েছে। একই সাথে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। কোম্পানীগুলো প্রতিনিয়ত দাম বাড়াচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। অধিকাংশ খেজুরের কেজিপ্রতি দাম ১০ টাকা বা তার বেশি বাড়ছে।
আদা ও রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ১০ টাকা বেশি। এ ছাড়া মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা হালি ও সাদা ডিম ৪৪ টাকা। হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা হালি।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি নতুন আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। এদিন ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৬০ কেজি, বেগুন ৮০ টাকা কেজি, সজনার ডাটা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২০০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা, শশা প্রতিকেজি ৬০ টাকা, মূলা ২০ টাকা ও প্রতিটি ব্রকলি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। প্রতিহালি কলা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, প্রতিকেজি সিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতিকেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা,
অপরদিকে, মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে প্রতিকেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ৩০০ টাকা, কই ৫৫০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৯০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৭৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা ও শিং ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বয়লার মুরগী বিক্রি হয়েছে ১৯০ কেজি দরে। হাইব্রিড সোনালী প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা, সোনালী ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা দরে। এছাড়া দেশি মুরগি ৪৮০ টাকা সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা, পাতিহাঁস ৪২০ টাকা, রাজহাঁস ৬০০ টাকা, লাল লেয়ার ৩০০ টাকা। এদিন খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১১৫০ টাকা ও গরু ৭৫০ টাকা।