বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
আর মাত্র কয়েকদিন পর শুরু হচ্ছে রোজা। আসন্ন এই রোজাকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। রোজাকে কেন্দ্র করে ছোলা, চিনি, বেসনের মতো যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেসবের দাম বেড়েছে আগেই। মাছ-মাংসের দামও চড়া। সবজির বাজারেও নেই স্বস্তি। আত্ম সংযমের এই মাস ঘিরে রমজান যেন বাজার আরও অস্থিতিশীল না হয়, সে লক্ষ্যে বাজার ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়াতে হবে।
রমজানকে সামনে রেখে দেশে বরাবরই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। অন্যান্য দেশে রমজানকে সামনে রেখে পণ্য মূল্য কমলেও আমাদের দেশে উল্টো চিত্র লক্ষ্য করা যায়। তবে রোজায় কেন দাম বাড়ে সেটা একটা বড় প্রশ্ন। অনেকে বলেন, এই মাসে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ভোক্তারা কেনাকাটা বাড়িয়ে দেন। অনেক ভোক্তা বাড়তি পণ্য কিনে মজুদ করেন। যার প্রভাব পড়ে বাজারে। যে কারণে সরকার প্রতি রোজায় সাধারণ মানুষকে পণ্য কিনে মজুদ না করার আহ্বান জানায়। এবারও প্রধানমন্ত্রী রোজায় বেশি পণ্য কিনে ঘরে মজুদ না করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
এবারের রোজায় সাধারণ মানুষ বাড়তি পণ্য কিনছেন বলে জানা যাচ্ছে না। কারণ সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। মহামারী করোনায় সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটাতে তারা অনেক কাঁট ছাঁট করছেন। পণ্য মজুদ করার চিন্তাও এবার করেননি অনেকে। যে কারণে বাজারে পণ্যের চাহিদা কমেছে। চাহিদায় ভাটা পড়ায় খুচরা বিক্রেতারাও পণ্য কিনছেন কম। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
পণ্যের চাহিদা কমলে, এর দাম কমবে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম কমেছে বলে জানা যায় না। মুরগির দাম বেড়েছে। সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশের কোনো কোনো বাজারে অবশ্য ছোলার দাম সামান্য কমেছে বলে জানা যায়। তবে চাহিদা যতটা কমেছে। দাম তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কমেছে কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। বাজারে সরবরাহ থাকলেও দেশে পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকে। চাহিদা কমলেও দাম কমে না। আর এর পেছনে মুনাফাভোগী একটি সিন্ডিকেট কাজ করে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ব্যবস্থাও নেয়া প্রয়োজন।
কেননা এই অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট খেয়ালখুশি মতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিনের পর দিন ভোক্তাদের পকেট কাটছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী অতীতে অনেকবার বলেছেন, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ালে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বারংবার ঘোষণা ও হুশিয়ারি দেয়া হলেও কার্যত তা খুব বেশি প্রভাব পড়ে না। এক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টদের তদারকি ও সক্ষমতাও নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচনী এই বছরে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বাজার অস্থিশীল করে ফায়দা লুটা শ্রেণিও মাথা চাড়া দেবে। তাই বাজার ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।