বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
বাংলাদেশে আপ্রিত রোহিঙ্গারা সত্যিই বোঝা! সামাজিক অপরাধ সৃষ্টিতে, সারা দেশে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ছড়িয়ে দিতে রোহিঙ্গারা প্রধান ভূমিকায়। ক্ষতির মুখে পরিবেশও। এ সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কী? পশ্চিমা দেশগুলোর অনেক প্রতিশ্রুতি ছিল তারাও এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কী করতে পারে?
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও মানছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশের জন্য বোঝা। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাংলা একাডেমি চত্বরে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও সেসব কাঁটাতারের বেড়া কেটে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে ইয়াবা নিয়ে আসছে। আমি বলছি তারা আমাদের জন্য বিষফোড়া হবে।’
সংবাদ মাধ্যমের তথ্য বলছে, রোহিঙ্গারা যে কোনো প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে যে কোনো অঘটন করতে পিছপা হচ্ছে না। মায়ানমার সেনাবাহিনীর হাত থেকে জীবন বাঁচাতে পাঁচ বছর আগে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তারও আগে এসেছিল চার লক্ষ। এদের ভিড়ে চলে আসে তস্কর রোহিঙ্গারাও। এর মধ্যে দু’লক্ষ শিশু জন্মগ্রহণ করায় এখন রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লক্ষ। দিনেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ১১৫ টি হত্যাকান্ড ঘটেছে। ধর্ষণ মামলা হয়েছে শতাধিক। উখিয়া-টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পেই একাধিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাম্পগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খুনোখুনি, অপহরণ, লুটপাট স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে রূপ নিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে ২ হাজার ৪ শতাধিক মামলায় আসামির সংখ্যা ৫,২২৬ জন। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রধারীদের নাম স্থান পেয়েছে। টেকনাফ-উখিয়ায় ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সক্রিয় আট গ্রুপের মধ্যে ১৯২ জনের হাতে রয়েছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে মোহাম্মদ নবি হোসেন গ্রুপ অন্যতম। এই গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মুক্তিপণ, খুন ও নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড করে আসছে।
মানবিক আশ্রয়ের ওপর ভর করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যে ভাবে অপরাধ জগতে নিজেদের প্রবেশ ঘটিয়েছে, একই সাথে সশস্ত্র হয়ে খুন-খারাবি, লুটপাট ও ধর্ষণের বিস্তর ঘটাচ্ছে তা বাংলাদেশ ও এর জনগণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকির সৃষ্টি করেছে। এখান থেকে উত্তরণের উপায় কী?