লক্ষ্যমাত্রার ছাড়িয়ে আমনের আবাদ, বাম্পার ফলনে খুশি চাষী

আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ১০:১০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


চলতি আমন মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি ও পরে অতিবর্ষণের ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু সব শঙ্কা ছাপিয়ে এবার জেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে বাজারে ধানের দামও ভালো। এতে খুশি চাষী।



রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বাম্পার ফলন হয়েছেও। এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

অধিদফতটির তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৮৩ হাজার ৫৬৭ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৮৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত মোট আবাদের ১৯ শতাংশ অর্থাৎ ১৬ হাজার ৮৬ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। যেখানে ৬৪ হাজার ৮১৯ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে।

এরআগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮১ হাজার ৭৫৯ হেক্টর। আবাদ হয়েছিলো ৮৩ হাজার ১৭৭ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো দুই লাখ ৯১ হাজার ৬২ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০ হাজার ৫০ হেক্টর। আবাদ হয়েছিল ৮০ হাজার ৮৩২ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছিল দুই লাখ ৮৬ হাজার ১৪৫ মেট্রিক টন।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী, পবা, দূর্গাপুর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবমুখর পরিবেশে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করছেন কৃষকরা। কেউ ধান কেটে বাড়িতে তুলছেন, আবার কেউ খেতের পাশে মাড়াই করছেন। কেউ কেউ ধানখেতের পাশে মাড়াই করে বস্তায় ভরে ধান বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষকরা বলছেন, এবার আমন চাষে তেমন বেগ পেতে হয় নি। তবে মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি ও পরে অতিবর্ষণের ফলে কোনও কোনও কৃষকের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেসব জমি ডুবে গিয়েছিল, সেগুলোতে ফলন কম হয়েছে। তবে বেশিরভাগ জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার পোকামাকড়ের আক্রমণও কম ছিল। সবমিলিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলন পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে মৌসুমের শুরুতে বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। তারা আশা করছেন, ধানের দাম এবার কমবে না।

আড়াই বিঘা জমিতে আমনের বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন গোদাগাড়ী উপজেলার চাষী আনসার আলী। তিনি বলেন, আড়াই বিঘা জমি আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত ধানের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয় নি। তবে এবার পানি খরচটা আমার বেশি হয়েছে। প্রতি বিঘায় ২২ মণের ওপরে ফলন হবে বলে আশা করছি।
দুই বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছেন দূর্গাপুর উপজেলার কৃষক বাবার মাহমুদ। তিনি বলেন, এবার ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে বন্যার সময় ধানক্ষেতের কিছু অংশ ডুবে গিয়েছিল। ডুবে যাওয়া অংশে ফলন কম হয়েছে। তবে বেশিরভাগ জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি, লাভবান হবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে ছালমা বলেন, এ পর্যন্ত যে ১৯ শতাংশ কর্তন হয়েছে, তাতে ভালো ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বেশি জমি আবাদ হওয়ায় উৎপাদনও লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে এমনটাই আশা করছি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ