নিজস্ব প্রতিবেদক
বছরজুড়ে পেঁয়াজের ভালো দাম থাকায় পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন চাষীরা। উৎপাদন খরচ তুলে পকেটে মোটা অঙ্কের মুনাফাও ঢুকছে স্বল্প সময়ে। এতে বাড়ছে পেঁয়াজের আবাদ।
কৃষি বিভাগ বলছে, পেঁয়াজের আবাদ লাভজনক। স্বল্প সময়ে এই আবাদ করা যায়। এছাড়া সম্প্রতি সরকার বিভিন্ন পণোদনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে পেঁয়াজের চাষ বাড়ছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রবি মৌসুমে এবার ১৮ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে পের্ঁয়াজের চাষ হচ্ছে। যেখানে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন। যা গত রবি মৌসুমে আবাদের পরিমাণ ছিলো ১৮ হাজার ৫৮১ হেক্টর। যেখানে উৎপাদন ছিলো ৩ লাখ ৫১ হাজার ১৪০ মেট্রিক টন।
উর্বর বেলে-দো-আঁশ মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য অতি উত্তম। পেঁয়াজ চাষের জন্য উঁচু জমি দরকার যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না। রাজশাহীর পবা ও গোদাগাড়ী উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, অপেক্ষকৃত নিচু জমিতেও শীতকালিন পেঁয়াজের চাষ হচ্ছে। অনেক ধানের জমিতেও বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। শীতকালিন পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন চাষীরা। আবার অনেকে ভারতীয় নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজ জমি থেকে তুলছেন।
কৃষকরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে ন্যায্য দাম পাওয়া যায়। কৃষকের শ্রমের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায়। কিন্তু আমদানি বেড়ে গেলে দাম কমে যায়। তখন কৃষকের উৎপাদন খরচ তোলাও দুষ্কর হয়ে যায়। সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম তেমন কোন ধস নামে নি। এতে কৃষকরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। একারণে আবাদও বাড়ছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলার পেঁয়াজ চাষী মোহাম্মদ বাবু বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম বিঘাখানেক জমিতে। নতুন জাতের পেঁয়াজ চাষ করায় অনেকটাই উদ্বিগ্ন ছিলাম। কিন্তু ফলন ভালোই হয়েছে। দামও কেজিতে ৭০ টাকার উপরে পেয়েছি। একারণে শীতকালীন কিছু পেঁয়াজ আবারও লাগালাম। আশা করছি ভালো লাভ পাবো।
গোদাগাড়ীর কৃষক রাফিউল ইসলাম জানান, আগাম জাতের পেঁয়াজের বীজ লাগানো আছে। আর কিছুদিন পর উঠবে। এখন বাজারে পেঁয়াজের ভালো দাম আছে। এই পেঁয়াজ উঠলে ওই জমিতে আবারও পেঁয়াজ লাগাবো। পেঁয়াজ চাষে খাটুনি ধানের চেয়ে কম। আবার ধানি জমিতেও পেঁয়াজ হচ্ছে। একারণে ধান না লাগিয়ে আবারও পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক মোসা. উম্মে ছালমা জানান, পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রণোদনাও দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আবাদটি লাভজনক। একারণে চাষীদের আগ্রহ বেড়েছে।