বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সজিবুল ইসলাম, লালপুর:
নাটোরের লালপুর পদ্মার চরে রসুলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিকাংশ ঘর দীর্ঘদিন ধরে তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে সচ্ছলদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে তারা প্রকল্পের ঘরে না থেকে নিজ পাকা বাড়িতে বসবাস করছে।
উপজেলা কার্যালয় ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের মে মাসে উপজেলার বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের পদ্মারচরে রসুলপুর মৌজায় ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’-এর আওতায় ২৪০ জন গৃহহীন পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর করা হয়। বর্তমান মাত্র ৫০/৬০টি ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে সুবিধাভোগীরা। বাকি ১৮০টি ঘরে তালা ঝুলছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে অধিকাংশ ঘরেই তালা ঝুলছে, তালাগুলোও মরিচা পড়ে গেছে। ঝোপঝাড়ে ঘিরে ধরেছে ফাঁকা ঘরগুলো। বারান্দা ও আশপাশে জমে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। কয়েকটি ঘরের বারান্দায় গবাদিপশু রাখা রয়েছে, একটি ব্যারাকে পাঁচটি ঘর, বেশ কয়টি ব্যারাকে মাত্র একটি ঘরে মানুষের দেখা মিলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাসকারী অনন্ত ৫ জন জানাম, যাঁদের ঘরবাড়ি আছে, তাঁরাও ঘর পেয়েছেন। তাই এখানে তাঁরা থাকেন না। কখনো ঘরগুলো দেখতেও আসেন না তাঁরা। কয়েকজন ঘরের মধ্যে ও বারান্দায় খড়কুটো রেখেছেন, তাঁরা কোনো দিন ওই সব ঘরে থাকেন নি, মাঝেমধ্যে কেউ কেউ ঘরের দরজা খুলে কিছু সময় অবস্থান করে আবার চলে যায়।
প্রকল্পের সুবিধাভোগী সাবিনা খাতুন ও আব্দুল হাকিম বলেন, এখানে রাস্তাঘাট নেই। টিউবওয়েলে পানি না উঠায় তীব্র পানির সংকট। কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। আমরা খুব কষ্টে আছি। অধিকাংশ ঘরে মানুষ না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভূগতে হয়।
এবিষয়ে স্থানীয় ভূমিহীন সংগঠনের আঞ্চলিক কমিটি সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রকৃত ভূমি ও গৃহহীনদের ঘর না দেওয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনেক ঘর খালি রয়েছে। যেসব ঘরে সুবিধাভোগীরা থাকেন না, তাঁদের নামের ঘরগুলো বাতিল করে নতুন করে প্রকৃত ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, ঘর তালাবন্ধ বা কেউ বসবাস না করলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সেটা বাতিল করা হবে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।