লালপুরে যুবলীগ নেতা হত্যায় ১৩ জন জামায়াত নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন

আপডেট: ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩, ২:২২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :


নাটোরের লালপুরের যুবলীগ নেতা খাইরুল ইসলাম (৩৭) হত্যা মামলায় ১৩ জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, নাটোরের লালপুরের কদিমচিলান ইউনিয়নের জামায়াত নেতা আবদুল করিম, মতি সরদার, আবুল কালাম আজাদ প্রিন্স, মকলেছ সরদার, মহসিন, খলিল, রানা, আনিসুর, রাজ্জাক, জার্জিস, কালাম, মিজানুর রহমান ও সানা। এরা কদিমচিলান ইউনিয়নের জামায়াতের বিভিন্ন পদধারী নেতা ছিলেন। এছাড়াও এই মামলার ৫৩ জন আসামীকে খালাস দেন আদালত।

রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি এন্তাজুল হক বাবু বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘিরে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালপুরে যুবলীগ নেতা খাইরুল ইসলামকে (৩৭) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলাটি একপর্যায়ে উচ্চ আদালতে আটকে ছিল। অবশেষে ঘটনার ১০ বছর পর রায় ঘোষণা করেন মহামান্য আদালত।

তিনি আরও বলেন, এই মামলার আসামীদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। একজন বিদেশে পালিয়ে গেছেন। বাকি সবাই উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা যায়, খাইরুল ঘটনার দিন দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। বাইরে চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ শুনে তিনি ঘর থেকে বের হন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকজন খাইরুলকে ঘিরে ধরেন। তারা রামদা, চায়নিজ কুড়াল দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খাইরুলকে হত্যা করেন। খাইরুলকে বাঁচাতে তার চাচা মজনু ও জলিল এগিয়ে এলে তাদেরও কোপানো হয়।

হত্যার ঘটনায় খাইরুলের ভাই শাহীনুর রহমান বাদী হয়ে লালপুর থানায় একটি মামলা করেন। শুরুতে তদন্তের কাজ ভালোভাবে চললেও অজানা কারণে বছর পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয় না। অনেক টালবাহানার পর দেড় বছরের মাথায় পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। ছয়জনের সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর ২০১৭ সালে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করলে মামলাটি স্থগিত হয়ে যায়। পরে উচ্চ আদালত স্থিতাবস্থা তুলে নিলে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি আবার চালু হয়।

নিহত খাইরুল লালপুর উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পেশায় নিরাপত্তাপ্রহরী খাইরুল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। ঘটনার সময় তার ছেলে জুবায়ের সপ্তম শ্রেণিতে ও মেয়ে খাদিজাতুল কুবরা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তাঁর স্ত্রী লিপি খাতুন তিন মাসের সন্তানসম্ভবা ছিলেন।

খাইরুলের সেই ছোট্ট ছেলে জুবায়ের হোসেন এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র। তাঁর বোন খাদিজাতুল কুবরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ