লিপু হত্যার ঘটনার ক্লু উদ্ধারে অন্ধকারে পুলিশ

আপডেট: অক্টোবর ২১, ২০১৬, ১১:৪১ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালিব হোসেন লিপু হত্যায় এখন পর্যন্ত কোন ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক চার জনের মধ্যে লিপুর রুমমেট ছাড়া বাকিদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও হল থেকে সংগ্রহকৃত আলামত বিশ্লেষণ করেও কোনো কুল-কিনারা করতে পারছে না পুলিশ।
মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) অশোক চৌহান বলেন, ‘হত্যার ঘটনায় নির্দিষ্ট কোন ক্লু আমরা পাইনি। তবে তার রুমমেটের কিছু কথার সূত্রে ধরে আমরা তদন্ত করবো। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা তদন্তকাজ আগাতে পারবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলাম, বন্ধু প্রদীপ এবং হলের দুজন গার্ডকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিলো। তেমন কোন তথ্য না পাওয়ায় রুমমেট ছাড়া বাকিদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মনিরুলকে আরো কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
এদিকে শিক্ষার্থী লিপু হত্যার পর ক্যাম্পাসে চলছে নানা গুঞ্জন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্বের ব্যাপারেও পরিবার বা বন্ধুরা কিছু বলতে পারছে না। হাসি-খুশি লিপু সবার সঙ্গে মিশতেন বলে জানিয়েছে সহপাঠীরা। তার এই মর্মান্তিক হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
লিপু হত্যার বিচার দাবি করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকা- খুবই দুঃখজনক। আমরা এঘটনার নিন্দা জানাই।’ তিনি জানান লিপুর হত্যার বিষয়ে বিভাগের আন্দোলন নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। শনিবার বিভাগের মিটিঙে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ডায়নিঙের পাশের ড্রেন থেকে শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকা- বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পারিবারিক কবরস্থানে লিপুর দাফন: মোতালেব হোসেন লিপুকে তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকু- উপজেলার মকিমপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে লাশবাহী গাড়ি মকিমপুরে নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। এসময় সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সন্তানের লাশ আকড়ে ধরে বিলাপ করতে থাকেন লিপুর বাবা বদর উদ্দিন ও মা হোসনে আরা বেগম। কলেজ পড়–য়া বোন ও ছোট ভাইয়ের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।
লিপুর বাবা বদর উদ্দীন বলেন, আমার ছেলে খুব শান্তশিষ্ট ছিল। সে কারও ক্ষতি করতে পারে না। আমি তাকে সাধ্যমত টাকা-পয়সা দিতাম। আমাদের সব আশা শেষ হয়ে গেল। কে আমার লিপুকে মারলো, তা আমি জানতে চাই। পুলিশের কাছে দাবি, আপনারা খুঁজে বের করেন কে আমার নিরীহ ছেলেকে এভাবে মারলো? এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ