বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক:
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিজেপির দ্বারা শাসিত না হওয়ার জনগণের ইচ্ছাকে পূরণ করা হবে। বিরোধী বৈঠকে শেষে এমনটাই জানালেন ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক মল্লিকার্জুন খাড়গে। বুধবার (৫ জুন) দিল্লির ১০, রাজাজি মার্গে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে বৈঠক হয় ইন্ডিয়া জোটের শীর্ষ নেতাদের।
এই বৈঠকে ভবিষ্যতের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন সন্ধ্যে ৬ টায় শুরু হয় বৈঠক। চলে ২ ঘণ্টার বেশি । ইন্ডিয়া জোটের ৩৩ জন নেতা বৈঠকে অংশ নেন। তৃণমূলের পক্ষে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ছিলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, কেসি বেনুগোপাল, তৃণমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জি, এনসিপির সুপ্রিয় সূলে, শারদ পাওয়ার, সপা নেতা অখিলেশ যাদব, জেএমএমের কল্পনা সোরেন,চম্পাই সোরেন সঞ্জয় রাউত, আপ নেতা সঞ্জয় সিং, রাঘব চাডডা, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন, আর জে ডি নেতা তেজস্বী যাদব, সিপিআই এম এল দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, অরবিন্দ সায়ন্ত প্রমুখ।
বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বক্তব্যের শুরুতেই ধন্যবাদ জানান ইন্ডিয়া দলগুলির নেতাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে, সমন্বয় করে লড়াই করেছি এবং পূর্ণ শক্তি দিয়ে লড়াই করেছি। আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন।’ বলেছেন, অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে জনাদেশ। নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী ও তার নাম নিয়ে লড়েছিল, বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না দিয়ে জনগণ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে।
মল্লিকার্জুন খাড়গের কথায়, ব্যক্তিগতভাবে মোদিজির কাছে এটা শুধু রাজনৈতিক পরাজয় নয়, নৈতিক পরাজয়ও বটে। তিনি বৈঠকে বলেছেন, ইন্ডিয়া জোট ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় অটুট বিশ্বাস রাখে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন , ‘ ইন্ডিয়া ‘ – ভারতের কন্ঠস্বর। দেশের জনগণ গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং আমরা পূর্ণ শক্তির সিং এই সংকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ম্যাজিক সংখ্যার আগেই আটকে দিতে সক্ষম হয়েছে ইন্ডিয়া। এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি পদ্মশিবির। যদিও এনডিএ ২৯৪ সংখ্যায় পৌঁছেছে। মঙ্গলবারই কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছিলেন,‘ভোটের এই ফল বিজেপির নৈতিক হার। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কংগ্রেস লড়াই করেছিল। এই লড়াই শেষ হয়নি।
আগামী দিনেও আমরা সংসদে এই নিয়ে আওয়াজ তুলব। মানুষ এ বার কোনো দলকেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়নি।’ অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জোটসঙ্গীদের সম্মান করি। ভোটের ফল প্রকাশের দিন কংগ্রেস দপ্তরে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল অভিযোগ করেন, মোদি-শাহ দেশের এজেন্সি, অর্ধেক বিচার ব্যবস্থাকে কব্জা করে রেখেছে। আমাদের লড়াই ছিল তার বিরুদ্ধে। সংবিধান বাঁচানোর লড়াইয়ে এটাই প্রথম পদক্ষেপ।
ফল প্রকাশের পর থেকেই টিডিপি ও জেডিইউয়ের অবস্থান নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। যদিও এদিন সকালে দিল্লিতে এনডিএ-র বৈঠকে অংশ নেয়ার আগে তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু বলেন, ‘আমি এনডিএতেই রয়েছি এবং বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি।’ বিকেলে এনডিএ বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন নাইডু। অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫টি আসনের মধ্যে টিডিপি একা পেয়েছে ১৬টি আসন।
জোটসঙ্গী জনসেনা পার্টি (জেএনপি) দু’টি এবং বিজেপি ৩টি আসনে জিতেছে। অন্যদিকে, বিহারের জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারও দিল্লিতে এসে বৈঠক করেন। এনডিএ থেকেই তৃতীয় মোদি সরকার গঠনের পক্ষে তিনি। তাঁর দল জেডিইউ ১২টি আসনে জয়ী হয়েছে বিহারে।
তথ্যসূত্র: আজকাল অনলাইন