রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
পুঠিয়া প্রতিনিধি:
ইউটিউবে পাকিস্তানি ও ফেসবুকে বিভিন্ন দেশের ভিডিও দেখে বিদেশি জাতের মুরগি পালন করে আর্থিক সঙ্কট ঘুচিয়ে পুঠিয়ার জামিরা গ্রামের শাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি নিজের ভাগ্য বদলেছেন। নিজের জমানো টাকায় কেনা ৬০ পিস তারকি জাতের মুরগি থেকে তার সংগ্রহে এখন রয়েছে শতাধিক বিদেশি মুরগি। স্থানীয় পর্যায়ে ডিম ও মাংসের চাহিদা মিটিয়ে তিনি বিক্রি করছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নের কিসমত জামিরা গ্রামের আব্দুল করিম ছোট ছেলে অন্তর শাহাবুদ্দিন (৫০)। ২০১৭ সালে তিনি ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি শেষ করে নিজ বাড়িতে আসেন। বাসায় বসে ইউটিউবে পাকিস্তানি ও ফেসবুকে বিভিন্ন দেশের ভিডিও দেখে ও পশুপাখির গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পর বিদেশি জাতের মুরগি পালনের শখ জাগে। মুরগি পালন দেখে নিজেও উদ্বুদ্ধ হয়ে সাবলম্বী হবার আশায় নিজের জমানো টাকায় প্রথমে ৩০০টাকা হিসেবে মাত্র ৬০ পিস তারকি জাতের মুরগি কিনে পালন শুরু করেন। এরপর মুরগির বাচ্চা ফুটিয়ে নিজের হাতে ভ্যাকসিনসহ সব উপকরণ প্রয়োগের মাধ্যমে বাচ্চা বড় করতে থাকেন। সেই মুরগির ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরি করে বিক্রি শুরু করেন। সেই মুরগির টাকায় নানা জাতের মুরগি সংগ্রহ করতে থাকেন।
শাহাবুদ্দিনের খামারে যে মুরগি রয়েছে তা ব্যতিক্রম। তিনি নিজেই মুরগির ডিম হ্যাচিং করে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করেন। খামারের ভিত্তরে অন্য কোন মানুষকে প্রবেশ করতে দেন না। বর্তমানে তার খামারে কলোম্বিয়ান ব্রাহামা, ইউরোপিয়ান সিল্কি, উইন্ডোট, কলোম্বিয়ান লাইট ব্রাহ্মা, গোল্ডেন স্রেফ ব্রাইট, কোচিন, ফিজেন্ট, ফাউমিসহ প্রজাতির মুরগি আছে। মুরগিগুলোর মধ্যে একেক পিচের দাম ৭০০-৮০০ শত টাকা পর্যন্ত। তার এ মুরগির ডিম থেকে বাচ্চাগুলো ফুটলে অনলাইনে (সোশ্যাাল মিডিয়া) চাহিদানুযায়ী চলে যায় দেশের রাজশাহী, দিনাজপুর, শেরপুর, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায়। বিভিন্ন জাতের বিদেশি মুরগির খামারের পাশাপাশি ৪টা দুম্বার খামার, ১৫টি বিভিন্ন জাতের গরু নিয়ে ডেইরি ফার্ম তুলেছেন।
শাহাবুদ্দিনের বাবা আব্দুল করিম বলেন, ‘প্রথম প্রথম ছেলের মুরগি পালনে বিরক্ত হতাম। এখন খারাপ আড্ডা না দিয়ে মুরগি পালনে সময় দেয়। এ থেকে ওর নিজের হাতখরচের টাকা আয় করছে। কিছু একটা করে নিজে স্বাবলম্বী হচ্ছে, এটা খারাপ কিছু না।’
শাহাবুদ্দিন বলেন, ২০১৭ সালে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকুরি শেষ করে নিজ বাড়িতে আসি। বাসায় বসে ‘ফেসবুক ও ইউটিউবে পাকিস্তানি বিভিন্ন দেশের ভিডিও দেখে বিদেশি জাতের মুরগি পালনের শখ জাগে। সরকারি সহায্য-সহযোগিতা পেলে আমি আরও বড়সড়ো করে বিভিন্ন ধরণের খামার দাঁড় করাতে পারবো। খামারে মুরগি, গরুর কোন সমস্যা হলে পুঠিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফোন করলে তারা দ্রুত এসে ও ফোনে সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন। তিনি আরও বলেন, শিক্ষিত বেকাররা বিদেশি মুরগি পালন করলে স্বাবলম্বী হতে পারেন। তিনি আধুনিকভাবেই মুরগিগুলো লালন পালন করছেন বলে দাবি করছেন।