শপথ নিয়েই নির্বাহী আদেশের ঝড় তুললেন ট্রাম্প

আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ণ

ছবি: রয়টার্স

সোনার দেশ ডেস্ক:


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই নির্বাহী আদেশের ঝড় বইয়ে দিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ওভাল অফিসে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি।
শুরুতেই বাতিল করেন পূর্বসূরি জো বাইডেনের আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ। এছাড়া, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারসহ একাধিক আদেশে সই করেন ট্রাম্প।
এই আদেশগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেছে বিবিসি:
অভিবাসন:
সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
ট্রাম্প তার উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘সমস্ত অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে’ এবং লক্ষাধিক ‘অবৈধ অভিবাসীকে’ ফেরত পাঠানো হবে। সেই প্রতিশ্রুতির আলোকেই অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেন ট্রাম্প।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিলের নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে এখন থেকে যারা অবৈধভাবে বা শিক্ষা-পর্যটনসহ সাময়িক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে সন্তান জন্ম দেবেন, তাদের সন্তান আর মার্কিন নাগরিকত্ব পাবেন না। তবে, যদি বাবা-মায়ের মধ্যে কেউ আমেরিকান নাগরিক হন, তাহলে সন্তান জন্মের পরেই মার্কিন নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
এ নির্বাহী আদেশে সই করার সময় ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার যেহেতু দেশের সংবিধানে নির্ধারিত, তাই তার এই পদক্ষেপ আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করতে হলে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। ট্রাম্প কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করবেন তা পরিষ্কার করেননি।
সীমান্ত বন্ধ করার নির্দেশ
ট্রাম্প সীমান্ত বন্ধ করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। সীমান্তে অবৈধ মাদকদ্রব্য পাচার, মানব পাচার এবং অপরাধ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাদক চক্রগুলোকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করা:
মেক্সিকোর মাদক চোরাকারবারী চক্রগুলোকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’তকমা দেওয়ার একটি আদেশেও স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে সালভাডোরান মাইগ্র্যান্ট গ্যাং এমএস-১৩ এবং ভেনেজুয়েলান গ্যাং ট্রেন ডি আরাগুয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই চক্রগুলোকে আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং হামাসের মতো গোষ্ঠীগুলোর তালিকায় রাখা হবে।
সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ:
অবৈধ অভিবাসনকে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ ফের শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সীমান্ত প্রাচীর তোলার নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন। তবে প্রাচীরের কিছু অংশ তৈরি করা হলেও, সেবার প্রাচীর নির্মাণ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। এবার দায়িত্ব গ্রহণের পর সেই অস্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতেই ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ।
‘মেক্সিকোতে থাকুন’ কর্মসূচি:
ট্রাম্প তার প্রথম দিনেই “মেক্সিকোতে থাকুন” কর্মসূচি পুনরায় কার্যকর করেছেন। এই কর্মসূচির আওতায় মেক্সিকো ছাড়া অন্য দেশগুলোর অভিবাসী, যারা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চায় তাদের মামলা মার্কিন আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে মেক্সিকোতে থাকতে বাধ্য করা হয়।
এর আগে মেক্সিকান নয় এমন প্রায় প্রায় ৭০ হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে এ কর্মসূচির অধীনে মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
অভিবাসন নীতি পরিবর্তন:
ট্রাম্প বাইডেন প্রশাসনের একটি অভিবাসন নীতি পরিবর্তন করেছেন। ওই নীতি কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলা থেকে ৩০,০০০ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। বাইডেন প্রশাসন এই নীতি সীমান্তে অবৈধ পারাপার বন্ধের লক্ষ্যে চালু করেছিল।
মৃত্যুদ- পুনরায় চালু করা:
ট্রাম্প মৃত্যুদ- পুনরায় চালুর একটি নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর অপরাধে জড়িত কোনও অবৈধ অভিবাসী এবং আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তা খুনে দোষী সাব্যস্ত যে কারও ওপর এটি প্রযোজ্য হবে।
নির্বাসন:
ট্রাম্প “ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ” পদ্ধতি বন্ধ করার জন্য একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যা অভিবাসীদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের শুনানি পর্যন্ত থাকার অনুমতি দিত। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন’ অভিযান শুরুর কথা ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন।
ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষ চার্চ ও স্কুলে অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকে- এমন দীর্ঘদিনের নীতিও বাতিল করবেন বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তার এসব কর্মসূচি নানা সমস্যার মুখোমুখি হবে, এতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় হবে এবং তা আইনি চ্যালেঞ্জেরও মুখোমুখি হতে পারে।
টিকটককে ৭৫ দিন সময়:
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটককে আইনি বাধ্যবাধকতা পালনের জন্য ৭৫ দিন সময় দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। নির্বাহী আদেশে উল্লেখ করা সময়ের মধ্যে কোন আইনি পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতবছর টিকটিক নিয়ে আইনে সই করেছিলেন। ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন যে সময় এটি বন্ধ হয়েছিল তা দুঃখজনক। যুক্তরাষ্ট্রে শনিবার টিকটক বন্ধ হয়ে গেলেও রোববার আবার চালু হয়।
সরকারি সংস্কার:
নতুন সংস্থা ‘ডজ’ এবং ইলন মাস্ক
ডনাল্ড ট্রাম্প “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডজ)” নামে একটি নতুন পরামর্শদাতা সংস্থা গঠনের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এই সংস্থা সরকারি খরচ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে। টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক এই সংস্থার নেতৃত্বে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ফেডারেল নিয়োগে স্থগিতাদেশ:
ট্রাম্প একটি আদেশে সই করে নতুন ফেডারেল নিয়োগ স্থগিত করেছেন। তবে, মার্কিন সামরিক বাহিনীসহ আরও কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য নয়- ততদিন পর্যন্ত যতদিন না ট্রাম্প প্রশাসন সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করায়ত্ব করছে।
বাসা থেকে দাপ্তরিক কাজের সুবিধা বাতিল:
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দপ্তরে উপস্থিত থেকে কাজ করতে হবে; ঘরে বসে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে না, এমন একটি নির্বাহী নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। এর ফলে এখন সরকারি কর্মীদের সপ্তাহে পাঁচদিন পূর্ণ সময় দপ্তরে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি সেন্সরশিপ বন্ধে পদক্ষেপ:
ট্রাম্প একটি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার মাধ্যমে “মত প্রকাশের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা” এবং সরকারি সেন্সরশিপ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ আদেশ অনুযায়ী, অ্যাটর্নি জেনারেলকে আগের প্রশাসনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি), এবং ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি)কর্মকর্তাদের কর্মকা- তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক নিপীড়ন বন্ধ:
প্রেসিডেন্ট একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার লক্ষ্য “রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সরকারের অস্ত্রায়ন” বন্ধ করা। এর আওতায়, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকা- পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক উদ্দেশে সেগুলো ব্যবহারের ঘটনা চিহ্নিত করা এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রতিকারমূলক ব্যবস্থ্ ানেওয়ার সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়া:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া শুরু করতে ট্রাম্প সোমবার একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থাটি কোভিড-১৯ মহামারী ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংকটের সময় ভুলভাবে পরিচালিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।বলেছেন, ডব্লিউএইচও ‘সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অসঙ্গত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’ এড়িয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাইডেন নীতির উল্টো পথে ট্রাম্প
আমেরিকা সর্বাগ্রে
ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে বিদেশি সহায়তা স্থগিত করেছেন এবং বিভিন্ন বিদেশি সহায়তা কর্মসূচি পুনপর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এই উদ্যোগকে নতুন “আমেরিকা সর্বাগ্রে’ পররাষ্ট্র নীতির অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
কিউবা
ট্রাম্প একটি নির্দেশ জারি করে বাইডেনের কিউবাকে সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের তালিকা থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন।
বাইডেন যুগের বিধিমালা বাতিল :
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম দিনই ট্রাম্প প্রায় ৮০টি বাইডেন-যুগের নিয়মবিধি বাতিল করে একটি আদেশে সই করেছেন।
নিয়ন্ত্রণ
ট্রাম্প একটি আদেশে সই করে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যাতে তারা নতুন কোনও নিয়ম বা বিধি চালু না করে, যতক্ষণ না ট্রাম্প প্রশাসন সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করছে।
টিকা নীতি পরিবর্তন
বাইডেন-যুগের নীতি থেকে সরে এসে ট্রাম্প ফেডারেল কর্মীদের জন্য কোভিড টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাদপ্তর পেন্টাগনের টিকা ম্যান্ডেটের কারণে বরখাস্ত হওয়া ৮,০০০ সামরিক সদস্যকে পূর্ণ বেতনসহ তাদের কাজে পুনর্বহাল করা হবে।
বৈচিত্র্য ও লিঙ্গ:
ট্রাম্প এক আদেশে ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র কেবল দুটো লিঙ্গকেই স্বীকৃতি দেবে। আর তা হচ্ছে নারী ও পুরুষ। একে পরিবর্তন করা যাবে না।
ডিইআই:
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সহায়তায় বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছে। এই নীতিগুলোকে সাধারণত “বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি” (ডিইআই) এর অধীনে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তবে এগুলো রক্ষণশীলদের ক্ষুব্ধ করেছে এমনকি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়েছে।
ট্রাম্প বলেছিলেন, ডিইআই প্রোগ্রাম চালায় এমন স্কুল বা প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সরকারি তহবিল দেওয়া নিষিদ্ধ করবেন, এমনকি এমন স্কুলগুলোতে তহবিলও বন্ধ করবেন, যারা “ক্রিটিক্যাল রেস থিওরি” (সিআরটি) পড়ায়। ট্রাম্প তার আদেশে এসব নীতিই বাতিল করলেন।
মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন :
‘আমেরিকা উপসাগর’
ট্রাম্প তার প্রথম নির্বাহী আদেশগুলোর একটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে “আমেরিকা উপসাগর” রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আলাস্কার মাউন্ট ডেনালি
একই আদেশে আলাস্কার ‘মাউন্ট ডেনালি’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘মাউন্ট ম্যাককিনলি’ রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
অর্থনীতি মূল্যস্ফীতি মোকাবেলা:
ট্রাম্প একটি আদেশে প্রতিটি ফেডারেল বিভাগ ও সংস্থাকে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এই নির্দেশ অনুযায়ী- বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্যপণ্য, এবং জ্বালানি খরচ কমানোর বিষয়ে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে, খরচ কমানোর জন্য প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে, তা এতে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরোনোর আদেশ সই:
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আবারো যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গতকারী দেশকে এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে চলা বৈশ্বিক লড়াই প্রচেষ্টা থেকে সরিয়ে নিলেন ট্রাম্প।
জাতীয় জ্বালানি জরুরি অবস্থা:
ট্রাম্প জাতীয় জ্বালানি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং কৌশলগত তেল মজুদ পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি নির্বাহী আদেশে, তিনি আলাস্কার তেলের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ওপর জোর দিয়েছেন এবং বলেছেন, “ড্রিল, বেবি, ড্রিল” নীতির আওতায় আমেরিকার জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানো হবে।
গ্রিন নিউ ডিল বাতিল
জ্বালানি সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশের অংশ হিসেবে ট্রাম্প তথাকথিত “গ্রিন নিউ ডিল” বা সবুজ প্রকল্প বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিবেশ বান্ধব কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ধারাবাহিক নির্দেশনা, আইন এবং তহবিল কর্মসূচিকে তার অন্যতম বড় অর্জন হিসাবে দেখছেন।
ট্রাম্প সে পথ থেকে সরে আসার পাশাপাশি নতুন বায়ু প্রকল্প নিষিদ্ধ করা এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির আদেশ বাতিল করবেন বলেছেন।
ক্যাপিটল হিল দাঙ্গাবাজদের ক্ষমা:
চার বছর আগে যে স্থাপনায় কট্টর সমর্থকদের হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প, সেই ক্যাপিটল হিলেই শপথগ্রহণের পরপর ওই দাঙ্গাবাজদের ক্ষমা করলেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ক্যাপিটল দাঙ্গার প্রায় ১,৬০০ জনকে ক্ষমার আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনেককে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কট্টর ডান গোষ্ঠী সদস্যদের সাজা কমানো:
ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ‘ওথ কিপারস’ এবং ‘প্রাউড বয়েজ’- এর মতো কট্টর-ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের সাজা কমানোর আদেশেও সই করেছেন। এর ফলে ২২ বছরের জেল হওয়া প্রাউড বয়েজ গোষ্ঠীর সাবেক প্রধান হেনরি এনরিক ট্যারিও মুক্তি পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল:
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে চরম ডানপন্থি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী ও ব্যক্তিদের ওপর সাবেক বাইডেন প্রশাসনের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version