শিবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থল বন্দরে স্থবিরতা ।। ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মানবেতর জীবনযাপন

আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০১৭, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

শিবগঞ্জ প্রতিনিধি


নানা জটিলতার কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থল বন্দর স্থবির হয়ে পড়েছে। বেকার হতে বসেছে ১০ হাজার শ্রমিক। ২০৫ জন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাখ লাখ টাকা লোকসানের খপ্পরে পড়ায় তাদের অধীনে থাকা প্রায় ৮শ কর্মকর্তা-কর্মচারী ঠিকমতো বেতনভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সোনামসজিদ স্থল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে নানা জটিলতায় পড়তে হচেছ।  নানা অজুহাতে গাড়ি ছাড় দিতে দেরী করায় আমরা সঠিক সময়ে পণ্যবাহী ট্রাক নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে না পারায় নানা ধরনের হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় পচনশীল পণ্য পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতি গাড়িতে আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। ফলে আমাদের অধীনে থাকা অ্যাসোসিয়েশনের প্রায় ৮শ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঠিকমতো বেতনভাতা দিতে না পারায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি আরো জানান, স্থল বন্দরের রাজস্ব আদায়ে অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা। ভারতের মোহদীপুর স্থল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফারের সাধারণ সম্পাদক ভূপন মন্ডলের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সোনামসজিদ স্থল বন্দরে বিভিন্ন অজুহাতে গাড়ি ছাড়ে নানা ধরনের হয়রানি ও বিলম্ব হওয়ায় ভারতের মোহদীপুরে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর ও কাস্টম সম্পাদক আবদুর রাকিব জানান, নিয়ম অনুসারে ফলের গাড়িতে ১০% ছাড় দেয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে সে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তারপরও নানা ধরনের হয়রানির কারণে ফল আমদানি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। কিছুদিন আগের যেখানে প্রতিদিন ৪০/৫০ ট্রাক আমদানি হতো, সেখানে বর্তমানে মাত্র ৮/১০ গাড়ি ফল আমদানি হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, গত বছর এসময় বন্দরে প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ গাড়ি পণ্য আমদানি হতো। বর্তমানে সে সংখ্যা অর্ধেকেরও কম আসছে। শ্রমিক সমন্বয় কমিটির সভাপতি সাদিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন,  শ্রমিক সর্দার মোখলেশুর রহমান সহ অনেকেই জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ৩১টি সংগঠন মিলে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। যারা আগে প্রতিদিন দেড়শ টাকা করে আয় করতে পারতো। বর্তমানে তাদের আয় কমে মাত্র ৩০ টাকায় এসেছে। ফলে অনেক শ্রমিকের পরিবারকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, একটি চক্র ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্থলবন্দরকে সম্পূর্ণ বন্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার মো. হাবিবের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ