বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
শিবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় মুক্তিযোদ্ধা বনায়নের বিক্রিত প্রায় ১শ ঝাড় গাছের ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিক্রিত গাছের অংশ বুঝে পেতে মুক্তিযোদ্ধার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করা হযেছে।
উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের লাভাঙ্গা গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা কামিরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত গত ১৬ জানুয়ারি একটি আবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের ঢোড়বোনা হতে মর্দানা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তার পার্শে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওয়াতায় মুক্তিযোদ্ধা বনায়নের অধীনে শিশু, মেহগনি, বাবরসহ বিভিন্ন জাতের গাছ রোপণ করা হয়েছিল। যার ৬০% মুক্তিযোদ্ধা কেয়ারটেকারের ও বাকী ৪০% সরকারের। সে মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা কেয়ারটেকার অংশ পেয়ে আসছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাসে নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতাবলে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকায় প্রায় ১শ ঝাড় গাছ বিক্রি করেন। যার সবগুলোই কাটা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের অংশ বুঝিয়ে দেয়া হয় নি।
আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধা কামিরুল ইসলাম জানান, ওই এলাকায় আমরা তিনজন কেয়ারটেকার রয়েছি। গাছ বিক্রি করা ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ৬০% হারে আমরা ২ লাখ ৪ হাজার টাকা পাবো। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের সেই অংশ না দিয়ে টালবাহনা করছেন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছি এবং আবেদনের অনুলিপি জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার, সংসদ সদস্র শিবগঞ্জ ১ ও র্যাব ৫ বরাবর প্রেরণ করেছি। আবেদনে উল্লেখ রয়েছে, গত ২০০৪ সালে ১৩ মে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৫৮৫নং স্মারকের একটি পত্রে মুক্তিযোদ্ধা কেয়ারটেকারদের অধিকার হরণ না করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। কিন্তু চেয়ারম্যান সে নির্দেশ অমান্য করে বিক্রিত গাছের টাকার ৬০% মুক্তিযোদ্ধা কেয়ারটেকারদের না দিয়ে হয়রানি করায় গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদন করে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ২২দিন পর সেই আবেদনটি ফেরত দেন বলে আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম আবেদন ফেরত পাঠানোর ঘটনাটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেন। তিনি বলেন, কোন মুক্তিযোদ্ধা আমার নিকট মুক্তিযোদ্ধা বনায়নের কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি এবং আমি কোন অভিযোগ ফেরত দেই নি। এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার সিরাজুল হকের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। তবে শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার বজলার রহমান সনু বলেন, অসুস্থতার কারণে ভারতে ছিলাম। গতকাল ফিরে এসেছি। ঘটনাটি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবো।
এ বিষয়ে নয়ালাভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাছগুলো রাস্তার পার্শে জমিওয়ালারা তাদের বলে দাবি করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছি।