চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ প্রতিনিধি:
সম্পর্কে আপন মামী-ভাগ্নে। দুইজনের ছিল পৃথক সংসার। তবে পরকীয়ায় জড়িয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে মামী-ভাগ্নে। এর জের ধরে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে রুবেল আলী (২৭) নামের এক যুবককে। এসময় তার ডান হাতের কব্জি কেটে ফেলা হয়। গুরুতর আহত ব্যক্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের নামোচাকপাড়া গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে শাহবাজপুর ইউনিয়নের মুসলিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দ্বিখন্ডিত কব্জিসহ আহত রুবেলকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
আহত রুবেল, তার পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ার জের ধরে তাদের পারিবারিক কলহ ছিল। প্রায় এক মাস আগে নিজের আপন মামীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন রুবেল। এরই জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর বাবার পরিবারের লোকজন রুবেলকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে ও হাতের কব্জি কেটে ফেলে।
আহত রুবেলের মা মুক্তারা বেগম বলেন, মাসখানেক আগে আমার ছেলে ভালোবেসে দ্বিতীয় বিয়ে করে। আজকে মাঠে গম মাড়াই করতে গেছিলো। সেসময় তাকে ধরে নিয়ে যায় ওই মেয়ের ভাই-চাচারা। পরে তাকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারধর করে এবং হাতের কব্জি কেটে আলাদা করে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এর আগেও একবার মামীকে নিয়ে পালিয়ে গেছিলো রুবেল। পরে পারিবারিকভাবে সমাধান করে মামী তার মামার সংসারে ফিরে যায়। এরপর আবার মাসখানেক আগে মামীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরই জের ধরে মামীর বাবার পরিবারের লোকজন তার হাতের কব্জি কেটে ফেলেছে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. এইচএম মামুন শিমুল জানান, হাতের কব্জি কাটা ও বিছিন্ন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাতের কাটা কব্জি একটি ব্যাগে ও হাতে কাপড় মুড়িয়ে আনা হয়। পরে জরুরি বিভাগে কাটা হাতে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রক্তপাত বন্ধ করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
হাত ও কব্জি জোড়া দেয়া সম্ভব কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এখন চিকিৎসা ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। যাতে জোড়া দেয়া যায়, সেজন্যই তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তবে তা জোড়া লাগানো সম্ভব কি না নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন, পরকীয়ার জের ধরে হাতের কব্জি কেটে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। তবে তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।