বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
উদ্বেজনক পরিস্থিতির অবসান কবে?
বাংলাদেশের শিশুদের সম্পর্কে খুবই উদ্বেগজনক তথ্য পড্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমুন্নতের প্রতিশ্রুতিই বারবার উচ্চারিত হলেও এই তথ্য ভয়াবহ কিছুরই ইঙ্গিত দেয়। মঙ্গলবার (১১ জুন) বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত আন্তর্জাতিক খেলাধুলা দিবসে শিশুদের সহিংসতার শিকার হওয়ার বিষয়ে এই তথ্য প্রকাশ করে ইউনিসেফ।খানে বলা হচ্ছে- বাংলাদেশে এক থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে ৯ জনই প্রতি মাসে পারিবারিক সহিংস পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। এই সহিংসতা প্রতি মাসে সাড়ে চার কোটি শিশুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিশু সুরক্ষায় অগ্রগতি সত্ত্বেও সহিংসতা, নিপীড়ন ও শোষণ-বঞ্চনার কারণে লাখ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শারীরিক ও মানসিক আঘাত পাওয়াকে শিশুরা যদি ভাগ্যলিপি বলে মেনে নেয় তাহলে তার মধ্যে এক ধরনের দাসত্ববোধের সৃষ্টি করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্যাতিত শিশু মানসিক ক্ষোভ নিয়ে বেড়ে উঠতে থাকে। পরিণতিতে সে উগ্র ও আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়ে ওঠে। তার মধ্যে এক ধরনের প্রতিশোধ পরায়ণতাও জন্ম নিতে পারে। সে তখন সমাজ, পরিবেশ ও প্রতিবেশকে নিজের মনে করে না। খুব স্বাভাবিকভাবেই এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন বেড়ে ওঠা শিশু সমাজের জন্য হুমকি তৈরি করে। সমাজে অস্থিরতা তৈরি হয়, সমাজের শান্তি বিঘ্নিত হয়। নিশ্চয় এমন পরিস্থিতি কারো কাম্য নয়।
ঘরে-বাইরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনা আমাদের ভবিষ্যত সমাজ জীবনের অস্থিরতারই প্রতিচ্ছবি। শিশুর সুন্দর ভবিষ্যতের মধ্যেই কেবল সুস্থ ও সুন্দর সমাজের প্রত্যাশা করা যায়। কিন্তু আমাদের সমাজ বাস্তবতায় অধিকাংশ শিশুই অবহেলিত, বঞ্চিত, লাঞ্ছিত ও অপমানজনক জীবন-যাপন করে থাকে। আজকের সামাজিক অস্থিরতার জন্য এই পরিস্থিতি অনেক ক্ষেত্রে দায়ি।
প্রকাশ্যে বা নিরবে যেভাবে হোক না কেন শিশুর প্রতি শাস্তিকে মেনে নিলে তা একটি দায়মুক্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলে, যা শাস্তির মত অমানবিক কাজকে এবং একই সাথে দেশের প্রচলিত আইন-বিধিকে লঙ্ঘনের মত ঘটনাকেও উৎসাহিত করে। এ ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করা সকলেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য।