সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হতেই হবে
নির্বাচন বানচালের সব ধরনের আন্দোলন-সংঘাত, নাশকতা ও সহিংসতা মোকাবিলা করেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এর আগের এক টার্ম মিলিয়ে পঞ্চমবারের মত তিনি প্রধানমন্ত্রী হলেন। একই সাথে সরকারের ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীকে তাদের দপ্তর বণ্টনও শেষ হয়েছে। তরুণ-প্রবীণদের সমন্বয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি থেকে চতুর্থবারের মত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী পাঁচ বছরের জন্য সরকারের সূচনা হলো।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭:০৩ মিনিটে বঙ্গভবনে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
নতুন সরকার গঠনের সাথে সাথে শুরু হয়েছে তাদের নতুন চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক ও স্থানীয় অর্থনৈতিক সংকটের ধারাবাহিকতায় এ সরকারকে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পুরোনো চ্যালেঞ্জগুলো সরকারের সামনে নতুন করে আবির্ভূত হবে। অর্থনীতিতে এ সমস্যা যতটা চেনা, ততটাই ঝুঁকির।
তবে সরকারের প্রধান কাজ হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। অর্থনীতিবিদদের ভাষায় প্রথমত, সুদ হার ব্যবহার করে চাহিদার মূল্যস্ফীতির মোকাবিলা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি করে সরবরাহের দিকটি ঠিক রাখতে হবে। পাশাপাশি যারা মূল্যস্ফীতির শিকার, নিম্ন আয়ের মানুষ ও অনানুষ্ঠানিক কাজ করে এমন অতি দরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরো জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে কম দামে চাল বিক্রি করা, বিভিন্ন ভাতা জোরদারও অব্যাহত রাখতে হবে।
মূল্যস্ফীতির আরেকটি কারণ ছিল ডলার ও টাকার বিনিময় হার। ডলারের দামে ব্যাংক ও খোলা বাজারে বড় ধরনের হেরফের হয়ে গেছে। সেটা নিয়ন্ত্রণ হলে বাণিজ্যে ভারসাম্য আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ডলারের রিজার্ভ সম্প্রতি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন আছে। আছে বৈশ্বিক নানা সংকটজনিত অভিঘাতও। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, নতুন সরকারকে নতুন করে পুরোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। আর্থিক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত সামষ্টিক অর্থনীতির পাশাপাশি আর্থিক খাতে যে সুশাসনের কথা বলেছে, দুর্নীতি আছে- এগুলো আরো বেশি দেদীপ্যমান হতে পারে। নতুন বছরে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে এগুলো মোকাবিলা করতে হবে। সংস্কার কার্যক্রম চালানোর প্রয়োজন হবে।
নিশ্চয় সরকার এসব চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়েই নতুন সরকারের যাত্রা শুরু করেছে। শেষ বিবেচনায় দেশবাসী কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি এবং স্বচ্ছন্দ জীবন গড়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে- এটাই এই সরকারের কাছে প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশা পূরণই হবে সাম্প্রদায়িক-সন্ত্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে মোক্ষম জবাব।