রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৯ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
কাম্প নউয়ে সের্হিও রামোসের শেষের নায়ক হয়ে ওঠার স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল। সপ্তাহ ঘুরতেই আরেক রোমাঞ্চের জন্ম দিলেন এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। গত সপ্তাহে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল করে হার এড়িয়েছিলেন, এবার দলকে এনে দিলেন পুরো তিন পয়েন্ট। অধিনায়কের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে রিয়াল মাদ্রিদ গড়লো অনন্য এক কীর্তি-নিজেদের ইতিহাসে টানা সর্বোচ্চ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড।
শনিবার রাতে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বারবার চিত্রপট পাল্টানো ম্যাচে একসময় হারের শঙ্কাই পেয়ে বসেছিল রিয়াল শিবিরে। কিন্তু শেষ দিকের নাটকীয়তায় দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে ৩-২ গোলের রোমাঞ্চকর এক জয় ছিনিয়ে নেয় লা লিগার শীর্ষস্থানধারীরা।
ম্যাচের সবকটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। আলভারো মোরাতার গোলে রিয়াল এগিয়ে গেলেও হোসেলু দ্রুত দুই গোল করে দেপোর্তিভোকে এগিয়ে দেন। এভাবে অনেকটা সময় পেরুনোর পর বদলি নামা মারিয়ানো দিয়াস স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান। আর যোগ করা সময়ের শেষ দিকে রামোসের ওই জয়সূচক গোল।
এই জয়ে ক্লাবের ইতিহাসে টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার নতুন রেকর্ড গড়লো রিয়াল। এর আগে ১৯৮৮ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৮৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ডাচ কোচ লেও বিনহাকারের অধীনে ৩৪ ম্যাচ অপরাজিত ছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি।
দিনের প্রথম ম্যাচে লিওনেল মেসির জোড়া গোলে ওসাসুনাকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছিল বার্সেলোনা। দেপোর্তিভোর বিপক্ষে জিতে আবারও ৬ পয়েন্টে এগিয়ে গেল জিদানের দল। ১৫ ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ৩৭। লুইস এনরিকের দলের পয়েন্ট ৩১।
চোটের কারণে গ্যারেথ বেল আগে থেকেই দলের বাইরে। ব্যস্ত সূচিতে চোট সমস্যা এড়াতে ‘বিবিসি’ আক্রমণত্রয়ীর অন্য দুই সদস্য ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা ও মাঝমাঠের মূল ভরসা লুকা মদ্রিচকেও বিশ্রাম দেন জিদান।
তারপরও ঘরের মাঠে রিয়ালের শুরুটা ছিল চিরাচরিত আক্রমণাত্মক মেজাজেই। চার মিনিটের ব্যবধানে ভালো দুটি সুযোগও পেয়েছিল তারা; তবে সাফল্য আনতে পারেনি। প্রথমবার প্রতিপক্ষের ভুলে নাচো ফের্নান্দেস ডি বক্সের মধ্যে বল পেলেও শট নিতে দেরি করে ফেলেন। আর সপ্তদশ মিনিটে মার্কো আসেনসিওর গোলমুখে বাড়ানো ক্রসে মাথা লাগাতেই ব্যর্থ হামেস রদ্রিগেস। ৩৫তম মিনিটে কোস্টারিকার মিডফিল্ডার সেলসো বোর্গেসের হেড পোস্টে লাগলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় রিয়াল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় রিয়াল। বাঁ-দিকে ইসকোর ছোট পাস ধরে একটু আড়াআড়ি গিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো কোনাকুনি শটে গোলটি করেন মোরাতা। তবে এগিয়ে যাওয়ার স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি তাদের। স্বাগতিকদের হতবাক করে দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে এগিয়ে যায় পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠদশ স্থানে থেকে খেলতে নামা দলটি। দুটি গোলই করেন ৫৮তম মিনিটে বদলি নামা হোসেলু। ৬৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে সতীর্থের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জোরালো শটে প্রথম গোলটি করেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। রিয়ালের গোল হজমের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই রোমানিয়ার ফরোয়ার্ড ফ্লোরিন আন্দোনের ডি বক্সে বাড়ানো বল ডান পায়ের শটে জালে পাঠান হোসেলু। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া জিদান ৭২তম মিনিটে মিডফিল্ডার ইসকোর বদলি নামান দিয়াসকে। ৮৩তম মিনিটে কোচের আস্থার প্রতিদান দেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড; ডান দিক থেকে লুকাস ভাসকেসের ক্রসে লিগে তার প্রথম গোলটি করেন তিনি। আর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে টনি ক্রুসের দারুণ কর্নারে অসাধারণ হেডে বের্নাবেউকে জয়ের আনন্দে ভাসান রামোস।-বিডিনিউজ