শ্রদ্ধা জানাতে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ বানান ভুল কেন

আপডেট: আগস্ট ১১, ২০১৭, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


চলছে শোকের মাস। এ মাসেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য এক শোকাবহ মাস। এ মাস জাতি স্মরণ করে বিন¤্র শ্রদ্ধায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করছে শোকের মাস।
শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে ব্যবহার করা হয় ব্যানার ও ফেস্টুন। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগ ও অনুতাপের বিষয়, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধা জানাতে ভুল বানান ব্যবহার করা হচ্ছে যথেচ্ছ। এর ফলে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ‘’শ্রদ্ধাঞ্জলি’’ বানানটি ভুল করে প্রদর্শন করছে। ভুলের লাইনে আছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মত প্রতিষ্ঠানও নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। শ্রদ্ধাঞ্জলি বানান ‘শ্রদ্ধাঞ্জলী’ লিখে ভুলভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে। এই ভুলের মিছিলের সংগঠনগুলো হলো, বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগ সদর দফতর, রাজশাহী মহানগর তাঁতি লীগ, রাজশাহী জেলা মিশুক মালিক সিএনজি মালিক সমিতি, জেলা মিশুক অটোরিকসা ও অটোটেম্পু চালক ইউনিয়ন, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়, রেলওয়ে চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (দক্ষিণ), মতিহার থানা আওয়ামী লীগ, বিনোদপুর বাজার বণিক সমিতি, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, রাজশাহী বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ (সিবিএ)।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ভবনে একটি বড় ফেস্টুন ও একটি বড় ব্যানার টানানো হয়েছে শোক দিবসের শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে। কিন্তু তারা ফেস্টুন ও ব্যানারে ভুল বানান ‘শ্রদ্ধাঞ্জলী’ লিখেছে।
ভুল করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও। এ তালিকায় রয়েছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ একটি ব্যানারে লিখেছে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও অপরটিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী, নগরীর হাদির মোড় এলাকার ফয়সাল অ্যাকাডেমিও একই অবস্থা। ব্যক্তি পর্যায়ের ব্যানারে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শোক দিবসের ব্যানার এবং নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকের সৌজন্য ব্যানারে ভুল করেছে শ্রদ্ধাঞ্জলি বানান। তারা লিখেছে ভুল বানান ‘শ্রদ্ধাঞ্জলী’।
বানান ভুল নিয়ে কথা হয় আবদুর রাজ্জাক নামের এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রাস্তার পাশে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড কিংবা পোস্টারে প্রায়ই বাংলা ও ইংরেজি শব্দের অদ্ভুত সব বানান দেখা যায়। এটি ভাষার প্রতি অবমাননা। ভাষার প্রতি সম্মান দেখাতেই বছরব্যাপি শুদ্ধ লিখি কর্মসূচি চলবে।’
জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক বলেন, আমরা বাংলা অ্যাকাডেমির বানান রীতি মেনে চলি। বাংলা অ্যাকাডেমির অভিধান মতে শুদ্ধ বানান শ্রদ্ধাঞ্জলি। এ বিষয়টি আমাদের সকলের মেনে চলা উচিত।