রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
লুৎফর রহমান, তানোর
শ্রাবণ মাসশেষ হতে গেলেই প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় রোপণকৃত আমন ধান নিয়ে শঙ্কায় তানোর এলাকার পড়েছেন চাষিরা। অপরদিকে বেপরোয়া বিদ্যুৎ লোডশেডিং শ্রাবণের খরতাপ আর ভ্যাপসা গরম জনসাধারণের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শ্রাবণের খরাতাপদহে রোপণকৃত আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। কৃষকরা বলছেন, একদিকে বিদ্যুৎ লোডশেডিং অন্যদিকে বিএমডিএর অসাধু অপারেটারদের চাঁদাবাজিতেই তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রোপণকৃত আমন ধানের জমিতে পানি সেচের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এলাকার চাষিরা। তারা বলছেন, এমনিতে শ্রাবণের শেষে বৃষ্টির পানির দেখা নেই। তারপর বেপরোয়া বিদ্যুৎ লোডশেডিং নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। কেননা উপজেলাটি কৃষির উপর ভরসা করেই এখান কার মানুষের জীবনযাত্রা। কৃষির মধ্যে ধান প্রধানতম ফসল আমন চাষ সবচেয়ে বেশি হয় এ উপজেলায়। বৃষ্টির পানি আমন চাষের মূল আশা ভরসা, ফলে কাক্সিক্ষত বৃষ্টির দেখা না পাওয়া ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিঙের কারণে কৃষকের কপালেও দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তার চরম ভাজ।
চিমনা গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, প্রথম থেকেই আমন চাষে সময় মত দেখা দেয়নি বৃষ্টির পানি। আষাঢ়ের শেষ দিকে জমি রোপণের জন্যে দেখা দেয় বৃষ্টির পানি। এবার শ্রাবণের প্রথম থেকেই মিলে নি বৃষ্টির পানি। প্রথম থেকেই পানির বিপরীতে চলে খরতাপ। সেই সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। এক প্রকার নাজেহাল হয়ে পড়েছে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের জীবনযাত্রা। জমিতে রোপণ হয়েছে আমনের চারা। কিন্তু দেখা নেই বৃষ্টির। আমন চাষ হয় বৃষ্টির পানিতে। যে ভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে তাতে কৃষকের মাথা নষ্ট হওয়া ছাড়া কোন উপায়ও নেই বলে তিনি জানান।
কচুয়া মোহনপুর গ্রামের কৃষক আবদুুল খালেক জানান, তেমন বৃষ্টির পানির দেখা নেই। জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজন মত পানি না থাকার কারণে আগাছা দমন করা যাচ্ছে না। আবার মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত রাত দিন লোডশেডিঙের কবলে তানোর উপজেলার হাজারো কৃষক।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, এবার উপজেলায় আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে ২১ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে। তিনি আরো বলেন, কলমা বাঁধাইড় মুন্ডুমালা, পাঁচন্দরসহ উপজেলায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি উঁচু । একদিন খরতাপ হলে শুকিয়ে যায় এবং পানি থাকে না। তাই আমরা বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ রাখছি। তারা যেন গভীর নলকূপগুলো সচল রাখে। তবে আমি কৃষকদের কাছে শুনেছি, কৃষকদের জিম্মি করে ডিপঅপেটারের বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নিচ্ছে। আগামী মাসিক সমন্নয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।