সোনার দেশ ডেস্ক:
শ্রীলংকা দারুণভাবে হতাশ করলো ক্রিকেটপ্রেমিদের। ফাইনাল বলে কথা! কিন্তু খেলাটা খেলাই হলো না। শ্রীলংকা মাঠে নামলো, কিছু সময় থাকলো- আবার চলে গেল। ভারত মাঠে না¥লো- কিছু সময় থাকলো আর জিতে নিলো চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। দশর্কের দশনি একেবারে জলে গেল।
গেলবারের এশিয়া চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা এবারো শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ পেয়েছিল। পুরো টুর্নামেন্টে আন্ডারডগ হিসেবে খেলে চমক দেখানো দলটি ফাইনালে ভারতের কাছে একেবারেই পাত্তাই পেলো না। রোবববার দেশের মাটিতে বিব্রতকর ব্যাটিংয়ে লজ্জাজনক পরাজয় মানলো তারা। শ্রীলঙ্কাকে একেবারে গুঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত।
এশিয়া কাপের ফাইনালে অবশ্যই বড় প্রত্যাশা নিয়ে শুরুতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ব্যাট করতে নেমেই তাদের পড়তে হলো দুঃস্বপ্নের মধ্যে। এক ওভারের গতিঝড়ে লণ্ডভন্ড হয়ে পড়ে লঙ্কানদের ব্যাটিং। পেসার মোহাম্মদ সিরাজ চতুর্থ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে শুরুতেই স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়ে দেয়। সিরাজ ৬ষ্ঠ ওভারে আবার আঘাত করে তুলে নেয় ম্যাচের পঞ্চম উইকেট। তাতে মাত্র ১২ রানেই শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেট পড়ে যায়! মাঝে কুশল মেন্ডিস প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলে তাকেও বোল্ড করে করে ছাড়েন সিরাজ। শ্রীলঙ্কা হার্দিক পান্ডিয়ার কাছে সবশেষ তিন উইকেট হারায়। ১৫.২ ওভারে ৫০ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা, যা ভারতের বিপক্ষে তাদের সর্বনিম্ন ওয়ানডে স্কোর।
ফাইনালের মতো মঞ্চে এমন সূচনা মোটেও প্রত্যাশিত ছিল না ক্রিকেটবোদ্ধাদের। কিন্তু ভারতের পেসারদের সামনে লঙ্কানরা শুরুতে অসহায় হয়ে পড়ে। তৃতীয় বলে কুশল পেরেরাকে শূন্যরানে গ্লাভসবন্দি করিয়েছেন জসপ্রীত বুমরা। তার পর চতুর্থ ওভারে সিরাজ বোলিংয়ে এলে বেসামাল হয়ে পড়ে লঙ্কানদের ব্যাটিং। প্রথম বলে পাথুম নিসাঙ্কাকে (২) তালুবন্দি করিয়েছেন। এক বল বিরতি দিয়ে পরপর তুলে নিয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা (০) ও চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট (০)। তাতে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জেগেছিল। শেষ পর্যন্ত সেটি হয়তো, কিন্তু এক বল বিরতি দিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট (৪) তুলে নিয়ে শুরুতেই লঙ্কানদের খাদের কিনারে ঠেলে দেন তিনি। তাতে ১২ রানেই পঞ্চম উইকেটের পতন হয়।
এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার বল করতে এসে অধিনায়ক দাশুন শানাকাকে বোল্ড করেন সিরাজ। তাতে একই স্কোরে পড়েছে লঙ্কানদের ৬ষ্ঠ উইকেট!
ধাক্কা সামাল দিতে আগলে থাকার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস। ভেল্লালাগের সঙ্গে মিলে ২১ রান যোগও করেছেন। কিন্তুসেই প্রতিরোধ শক্ত ছিল না। ৩৩ রানে মেন্ডিসকে বোল্ড করে সেই প্রতিরোধটাও ভেঙে দেন সিরাজ। পরের ওভারে ভেল্লালাগেকে পান্ডিয়া ফিরিয়ে দিলে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে, শেষটা আর বেশি দূর গড়াচ্ছে না।
শেষ করেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার দুই স্পেলে ৬ বলের মধ্যে শেষ তিন ব্যাটার আউট হন। ১২তম ওভারে দুনিথ ভেল্লালাগেকে লোকেশ রাহুলের ক্যাচ বানান তিনি। ১৬তম ওভারে
প্রথম দুই বলে প্রমোদ মাদুশান ও মাথিশা পাথিরানাকে ফিরিয়ে শ্রীলংকাকেকে গুটিয়ে দেন হার্দিক।
৭ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন সিরাজ। ২.২ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে তিন উইকেট লাভ করেন হার্দিক।
সিরাজের ভয়ংকর বোলিংয়েই ভারতের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় ৬ দশমিক ১ ওভারে। ইশান কিষাণ ও শুবমান গিলের ওপেনিং জুটিতে জিতে যায় ভারত। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ইশানের সিঙ্গেলে তারা ১০ উইকেটের জয়ে অষ্টম এশিয়া কাপ ট্রফি নিশ্চিত করে। ইশান ২৩ ও শুবমান ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন