সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে আলোচনা এড়ালেন ট্রাম্প-মোদি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫, ৫:৫৩ অপরাহ্ণ

নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি।

সোনার দেশ ডেস্ক:


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে বৈঠক করেছেন। তারা অস্ত্র বিক্রয় থেকে শুরু করে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করলেও সংখ্যালঘু অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে ওয়াশিংটনে দুই দলেরই তেমন উদ্বেগ দেখা যায়নি। এর মূল কারণ ভারত তার বাণিজ্য বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে এবং চিনের মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেও এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউজে বৈঠকের সময় এবং পরবর্তী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতা মানবাধিকার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। এমনকি তাদের অনলাইন বিবৃতিতেও এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘ভারতে মানবাধিকার ইস্যুতে ট্রাম্পের কোনও অবস্থান নেওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, তার পররাষ্ট্রনীতি মূলত স্বার্থভিত্তিক, যেখানে মানবাধিকার বা মূল্যবোধের জন্য তেমন জায়গা নেই।’

যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন, তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মাঝে মাঝে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভারত সরকার এসব প্রতিবেদনের সমালোচনা করে এগুলোকে ‘গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

চ্যাথাম হাউসের সিনিয়র গবেষক চিতিগ বাজপায়ি মোদি ও ট্রাম্পকে ‘শক্তিশালী নেতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে মিল রয়েছে।
কুগেলম্যান বলেন, মানবাধিকার বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সাদৃশ্য তাদের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে।
বিভিন্ন অধিকার সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্প ও মোদির মানবাধিকার রেকর্ডের সমালোচনা করে আসছে।

ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ প্রত্যাহার করেছে এবং তার গাজা পরিকল্পনাকে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা ‘জাতিগত নির্মূলের প্রস্তাব’ বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বহুবৈচিত্র্য, ন্যায়বিচার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি বাতিল করেছেন, যা মূলত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতা করতে চালু হয়েছিল।
এদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মোদি সরকারের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণের সমালোচনা করেছে।

তারা বলছে, ভারতে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, যা জাতিসংঘ ‘মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেছে। এছাড়া, ধর্মান্তরবিরোধী আইন বিশ্বাসের স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করছে, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়েছে এবং মুসলিমদের মালিকানাধীন সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনাও ঘটেছে।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ