সংসদ নির্বাচন ঘিরে গুজব

আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

প্রতিরোধে সব পক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিএনপি ও সমামনা দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের মুখেও নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের প্রতিরোধ করার ঘোষণায় দেশে হতাকাণ্ডসহ নাশকতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমও সংঘটিত হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণের মধ্যে উদ্বেগ থাকলেও নির্বাচন যত কাছিয়ে আসছে মানুষের অংশগ্রহণ ততই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ভোটাররা যে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তা নিয়ে কোনো সংশয় নয়। সারা দেশে এখন নির্বাচনের পালে জোর হাওয়া। অফিসে, আড্ডায়, চা-খানায় নির্বাচন নিয়েই আলোচনার ঝড়। অর্থাৎ ভোটাররাও পছন্দের প্রার্থীদের নিয়ে গলা ফাটাচ্ছে। সারা দেশেই উৎসবমুখর পরিবেশ।

নির্বাচনকে সামনে রেখে গুজবের ছড়াছড়ি চলছে। গুজব থেকে রেহায় পাচ্ছেন না খোদ প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনযায়ী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত তিন মাসে সর্বোচ্চ ৫৬টি গুজব ছড়ানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে। এরপরই বেশি গুজবের শিকার হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী। আর এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম। যদিও এ প্রতিষ্ঠান দুটি নির্বাচনি গুজব ঠেকাতে মনিটরিঙের ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছিল।

সংবাদ মাধ্যমের খবর- রিউমর স্ক্যানার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের মাসভিত্তিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সংখ্যার দিক থেকে ডিসেম্বরে ২১৫টি, নভেম্বরে ১৭৫টি, অক্টোবরে ২১০টিসহ মোট ৬০০টি গুজবের ঘটনা চিহ্নিত করা গেছে। যদিও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বরে জানায়, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর নির্বাচন সংক্রান্ত মিথ্যা কিংবা উসকানিমূলক কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে তাদের ৪০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট যেকোনো তথ্যের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২৮ নভেম্বর বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশগুলোর নির্বাচন নিয়ে পলিসি ঘোষণা করে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। বিটিআরসি বলছে, গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ফেসবুক, টিকটক ও গুগলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। তাতে সাড়া দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুজব খুব বিশ্বাসযোগ্য করে উপস্থাপন করা হচ্ছে। ফলে আশঙ্কার জায়গা বেশি। এ ধরনের গুজবে সাধারণ মানুষ তো বটেই, শিক্ষিত মানুষেরাও বিভ্রান্তি হয়। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কিংবা গুজব ছড়িয়ে নির্বাচনি ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে দুরাভিসন্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে আছে। ভোটের দিন নানাধরনের গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণে এ নির্দেশ দেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। গুজব ছড়িয়ে কেউ যাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বিভ্রান্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ভোটারদেরও সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। ঘটনা যাচাই না করে কোনোভাবেই কোনো উড়ো খবরে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। শান্তিপূর্ণ ভোট সম্পন্ন করতে সব পক্ষকে সচেতনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ