বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
শামীউল আলীম শাওন
মূল সড়ক থেকে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই ভেতরকার খাবার ও পানীয়ের দোকানগুলোতে প্রায় সব পণ্যের মূল্য নির্দিষ্ট দামের চেয়ে কিছুটা বেশি। অনিয়ম হলেও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আসা বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা এটাই মেনে নিয়েছেন।
আর যাত্রীদের এ অসহায়ত্বকে ব্যবহার করছে অসাধু দোকানিরা। স্টেশনে আসা সাধারণ মানুষের কাছে বোতলজাত পানি ও পানীয়ের চাহিদা বেশি থাকায় এ দুই পণ্যের দাম অহরহই কিছুটা বেশি নেয় তারা।
অথচ স্টেশনের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ প্লার্টফরমের দিকে গিয়ে এগুতেই দক্ষিণ পার্শে দেখা মিললো বিনামূল্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাঘুরি করা বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের অনেকেই জানেন না এ ব্যবস্থার কথা।
সম্পূর্ণ জনস্বার্থে করা হলেও এ বিশুদ্ধ পানির বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে নেই তেমন জানাশোনা। বিনামূল্যের পানি বিতরণের নির্দিষ্ট স্থানের পাশে অপেক্ষমাণ অনেককেই পান করতে দেখা গেলো বোতলজাত পানি।
স্টেশনে আসা যাত্রীদের জন্য এ পানির ব্যবস্থা করেছে মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রবি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে স্টেশনে তৈরি করা হয়েছে পানির সুব্যববস্থা। পুরুষ, নারীর জন্য পৃথক পৃথক স্থান করে রাখা হয়েছে। আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। রাখা হয়েছে মুসল্লিদের জন্যে অজুর ব্যবস্থাও। এছাড়া সেখানে আছে বসার জন্য কাঠের টুল।
যাত্রীদের সুবিধার্থে রয়েছে পানির গ্লাসও। অনেককে পানি পান করতেও দেখা গেলো। কেউ আবার বোতল কিংবা পাত্রে করে পানি ভরে দৌড়ে ট্রেন ধরছেন। গ্লাসে লাগানো রয়েছে শিকল, যাতে হারিয়ে না যায়।
ওয়াটার এইডের সহায়তায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রবি কর্তৃক বাস্তবায়িত এই পানির কথা নিয়মিত যাতায়াতকারী যে যাত্রীরা জানেন, তারা এখান থেকেই পানি নেন। কিন্তু অনেকেই এটার কথা জানেন না। আবার জানলেও পানি কতটা বিশুদ্ধ তা নিয়ে সন্দিহান থাকেন অনেকে।
বিশুদ্ধ পানির ট্যাপের পাশে কিছু সময় দাঁড়িয়ে দেখা গেলো, অনেকেই বোতল ভর্তি করে পানি নিচ্ছেন। পানির কলের দেয়ালে লেখা রয়েছে কিছু তথ্য। সেখান থেকে জানা গেলো স্টেশনে আগতদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতেই এটা করা হয়েছে। ট্রেন যাত্রীদের পানীয় জল সরবারাহ ও বিশুদ্ধ পানি পানের সুযোগ বাড়াতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়াটার এইডের কারিগরি সহযোগিতায় এ জনসেবামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রবি।
তবে সেখানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলার কারণে বিশুদ্ধ পানির স্থানটি অপরিষ্কার ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়েছে। তাই বিশুদ্ধ পানি মানুষ কাছে ঠিক মত পৌঁছাচ্ছে না। আর এ বিষয়টি দেখাশুনার দায়িত্ব রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশন মাস্টারের কাছে না থাকার ফলে তিনিও তা তদারকি করতে পারছেন না।
এ বিশুদ্ধ পানির বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় তিন বছর আগে নির্মাণ করা হয় এবং সেখানে দেখাশুনা করার জন্য অস্থায়ী প্রহরী হিসেবে তিন জনকে নিয়োগ প্রদান করে রবি। যাদেরকে প্রতিমাসে নিয়মিত ভাবে বেতন প্রদান করে রবি।
কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার জাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, যাদেরকে দেখাশুনা করার জন্য রবি নিয়োগ প্রদান করেছেন, তারা যথাযথ ভাবে তাদর দায়িত্ব পালন করেন না। ফলে সেই জায়গাটি ঠিকমত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে না। আর তারাও সেখানে থাকে না।