বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহীর তানোর ডিজিটাল পোষ্ট অফিসের গ্রাহকের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লোপাট করে গা ঢাকা দিয়েছে পোস্ট মাস্টার। এ ঘটনায় রাজশাহীর ডাক বিভাগের পরিদর্শক মজিবুর রহমান বাদী হয়ে তানোর পোষ্ট মাষ্টার মকছেদ আলীকে অভিযুক্ত করে থানায় জিডি করেছেন। এরআগে রাজশাহী ডাক বিভাগের তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় দ্বিতীয় দফা তদন্তে কাজ করছে রাজশাহীর ডাক বিভাগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী আঞ্চলিক ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। তিনি জানান, গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাক বিভাগের অভ্যান্তরীণ তদন্ত চলছিলো। টাকা গায়েবের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তানোর ডিজিটাল পোষ্ট অফিসের পোষ্ট মাষ্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে অনেক গ্রাহক তাদের টাকার বিষয়টি জানতেন না। তাই মাইকিং করে সকল গ্রাহককে তাদের হিসাব বইসহ আসতে বলা হয়েছে।
সোমবার পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকার নয়ছয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। আনুমানিক প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো নয়ছয় হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সকল গ্রাহকের হিসাবটা পাওয়া পর সঠিক পরিমাণটা বলা যাবে।
এদিকে, পোষ্ট মাষ্টার মকছেদ আলীকে সাময়িকভাবে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হলেও তদন্ত সহযোগিতা করতে অফিসিয়াল চিঠি দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করলেও এখন আত্মগোপনে চলে গেছেন। সোমবার অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েও তিনি অফিসের উপস্থিত হন নি। ফোনও বন্ধ রেখেছেন।
ভুক্তভোগীদের একজন তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, আমি ২০২১ সালে বাংলাদেশ পোষ্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংকে তানোর পোষ্ট অফিসে মেয়াদী আমানত হিসাবে এফডিএ করি ৬ লাখ টাকা। পরে ২০২২ সালে আবারও ৪ লাখ টাকা এফডিএ করি। প্রথম বারের ৬ লাখ টাকার সরকারী খাতাসহ পাশ বহিতে আছে। কিন্তু পরে ৪ লাখ টাকা আমার পাশ বহিতে হাতে লেখে তুলে দিয়েছে। কিন্তু সরকারী রেজিষ্ট্রি খাতায় লেখা নেই। এই ৪ লাখ টাকার কোন হদিস নাই।
এমনিই অরুপ কুমার নামে এক গ্রাহকের ৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, পুস্পা রানী ৫ লাখ টাকা, সাবিয়া খাতুনের ৪ লাখ টাকা, কৃষ্ণা রানীর ৫ লাখ টাকা, রাশেদুল ৩ লাখ টাকা, পার্থ দাসের ১ লাখ টাকা, আঙ্গুরা খাতুনের ৫ লাখ টাকা, রেজিয়া খাতুনের ৫ লাখ টাকাসহ প্রায় কোটি টাকার হদিস পেতে কাজ করছে ডাক বিভাগ।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, এ ঘটনায় জিডি হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।