সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডর সাথে জড়ালে বিএনপি-জামায়াতকে ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

সোনার দেশ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের নামে কোনো অগ্নিসংযোগ বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড লিপ্ত হলে বিএনপি-জামায়াত চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতসহ আরো অনেকেই মাঠে নামতে চায়। আন্দোলন করুক এ ব্যাপারে আমাদের কোনো কথা নাই। কিন্তু তারা যদি আবার ওই রকম অগ্নিসন্ত্রাস বা কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করে বা কোনো ধরনের দুর্বৃত্ত পরায়ণতায় জড়ায় আমরা কিন্তু ছাড় দেব না। এটাই বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী শনিবার (২১ অক্টোবর) নবনির্মিত ১৫ তলা বিশিষ্ট বার কাউন্সিল ভবন উদ্বোধন পরবর্তী আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন এলাকায় নবনির্মিত অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত ১৫ তলা বিশিষ্ট বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবনের উদ্ধোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন, এই বিএনপি আমাদের কত নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। চোখ তুলে নিয়েছে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে তাদের হাঁড় গুড়োগুড়ো করে হত্যা করেছে। এরপর আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্ট করলো ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে। তারা সে সময় ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। ৩ হাজার ২২৫ জন লোককে অগ্নিদগ্ধ করেছে, ৫শো জনকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ৩৮৮টি গাড়ি, সাধারণ মানুষের প্রাইভেট কার, সিএনজি, ২৯টি রেল, ৯টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করেছে। চলমান প্রাইভেট গাড়ি, বাস ও ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারহীনতা যেন এদেশে আর না চলে। ন্যায় বিচার যেন মানুষ পায়। স্বজন হারিয়ে বেঁচে থাকা যে কী কষ্টের যারা আমরা আপনজন হারিয়েছি তারা তা বুঝি। তিনি জাতির পিতা হত্যা এবং ৩ নভেম্বরের জেলহত্যার বিচার করতে পারায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শোকরিয়া আদায় করেন। এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল। তিনি জিয়াকে এর বেনিফিসিয়ারি বলেও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, যেটা আগে করেছিল। সেটা যেন আর করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমার একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে, কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না থাকে। যে যা পারেন তাই উৎপাদন করুন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধুর আইনি দর্শন’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয় এবং পরে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পিরা সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন তিনি।

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশেনের মেয়র ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এএম আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী মো. নজীবুল্লাহ হিরু প্রমুখ। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যসুত্র: বাসস