সমাবেশ করতে না দেয়ায় বিক্ষোভ কর্মসূচি বিএনপির

আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০১৭, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


ঢাকায় ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি।
শনিবার সকালে পুলিশবেষ্টিত নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক আজকের কর্মসূচিতে বর্বরোচিতভাবে বাধা দেয়ার তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।
“আজকে কর্মসূচি করতে না দেয়া এবং গত ৫ জানুয়ারি সারাদেশে আমাদের ঘোষিত কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে আমরা সারাদেশে মহানগর ও জেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।” রাজধানী ঢাকার প্রতিটি থানায় বিক্ষোভ হবে বলে জানান রিজভী।
দশম সংসদ নির্বাচনের দিনটি ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস হিসেবে পালন করে বিএনপি। এবছর দিনটিতে সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল করলেও ঢাকায় দুদিন পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের পরিকল্পনা করেছিল তারা। তবে সমাবেশের অনুমতি পায়নি বিএনপি। না দেয়ার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
২০১৫ সালে ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধ ডেকেছিল বিএনপি; তিন মাসের ওই কর্মসূচিতে নাশকতায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের এবারের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ বললেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, বিএনপি আবারও পরিস্থিতি সহিংস করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় আবারও প্রমাণিত হল, তারা (সরকার) গণতন্ত্রের সকল দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতার গলায় ফাঁসি দড়ি লটকিয়ে দিয়েছে। নিঃশব্দ বোবাকণ্ঠই আওয়ামী বাকশালীদের কাছে প্রিয়।”
শনিবার সকাল থেকে বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ। কার্যালয়ের সামনে দুই সারিতে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। সাদা পোশাকেও রয়েছে বাহিনীর সদস্যরা। কার্যালয়ের ডান দিকে জলকামান, আর্মার্ড কার, প্রিজন ভ্যানসহ পুলিশের কয়েকটি গাড়ি রাখা রয়েছে। কার্যালয়ের ভেতরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী, সহ দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদসহ কয়েকজন অফিস কর্মী ছাড়া আর কেউই নেই।
সকাল সাড়ে ৯টায় কার্যালয়ের সামনে থেকে তিন কর্মীকে পুলিশ আটক করে বিএনপির দপ্তরে কর্মরত কর্মীরা জানিয়েছেন। বিএনপির কার্যালয়ের পাশে দিয়ে পথচারীদেরও যেতে দিচ্ছে না পুলিশ।
রিজভী বলেন, “পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও একই যুদ্ধংদেহী পরিবেশ বিরাজমান।”
“আজ ক্রসফায়ারে নিহত লাশ ও আটক বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বন্দিশালার উপর, গুম-খুন হয়ে যাওয়া সন্তানদের মায়ের অশ্রুজলের উপর বিরোধী দলের কর্মসূচিকে থেঁতলে দেওয়ার জন্য জলকামান আর আর্মার্ড কারের উপর আওয়ামী গণতন্ত্রের পতাকা উড়ে,” বলেন তিনি।
সরকারকে হুঁশিয়ার করে বিএনপি নেতা বলেন, “তার পরিণতিতে আপনাদের পরিস্থিতি যদি হয় ভয়াবহ, তাহলে আপনাদের জন্য কান্না ও হায়-হুতাশ করার লোকও খুঁজে পাবেন না।”
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, সহ দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার পর পুলিশ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।- বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ