শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:
ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়া সদর উপজেলায় পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে উন্নত চিকিৎসার অভাবে প্রায় এক মাস যাবত বিছানায় কাতরাচ্ছেন নওগাঁর কৃষক মোকাব্বের হোসেন। এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজখবরও নেননি মোকাব্বেরের। বর্তমানে তার চিকিৎসা ব্যয় চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার। তাই সরকারিভাবে উন্নত চিকিৎসা চান মোকাব্বের।
সূত্রে জানা নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের মৃত-আব্দুল লতিফ মন্ডলের ছেলে মোকাব্বের হোসেন। তিনি পেশায় একজন কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ী। জীবিকার তাগিদে মাঝে মাঝে বগুড়ায় থাকেন কৃষক মোকাব্বের।
গত ৫আগস্ট বিবেকের তাড়নায় রাজপথে বের হন তিনি। ওদিন দুপুরে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে সাধারণ মানুষদের মারছিলো। এমন ঘটনা দেখে মোকাব্বের অন্য বিক্ষুদ্ধ সাধারণ মানুষদের সঙ্গে যোগ দিয়ে পুলিশদের ঘেরাও করার চেষ্টা করেন।
তখন পুলিশ পালাতে গিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে ফাঁকা রাবার বুলেট ছোড়ে। এই সময় প্রায় ৫০টিরও বেশি রাবার বুলেট মোকাব্বের শরীরে প্রবেশ করে। এমতাবস্থায় তাকে কোন হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান না করলে বাসায় একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সহায়তায় অর্ধেক গুলি শরীরের ভিতর থেকে বের করতে পারলেও যেগুলো শরীরের অনেক গভীরে প্রবেশ করেছে সেগুলো এখনোও পর্যন্ত বের করা সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে একজন বিশেষজ্ঞ সার্জনের মাধ্যমে গুলিগুলো বের করতে হবে।
আহত মোকাব্বের স্ত্রী হুমায়রা জানান এতোদিন সামর্থ অনুযায়ী চিকিৎসা চালিয়ে আসলাম কিন্তু এখন আর পারছি না। সংসার চালাবো না স্বামীর উন্নত চিকিৎসা করবো। এক মাসের বেশি সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত আমার স্বামীর কেউ খোঁজখবর নেয়নি।
যদি সরকারি ভাবে আর্থিক সহযোগিতা কিংবা উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে ধীরে ধীরে চিকিৎসার অভাবে আমার স্বামী পঙ্গত্ব বরণ করবে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বিছানায় শুয়ে থাকার কারণে সংসার চালাতে আমি এখন হিমশিম খাচ্ছি। আমার পরিবারের উপর দ্রুত সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
আহত মোকাব্বের হোসেন জানান গত এক মাসের বেশি সময় গুলি খেয়ে বিছানায় শুয়ে আছি। আজ পর্যন্ত কোন নেতারা আমার খোঁজ খবর নিলো না। হায়রে রাজনৈতি। এতোদিন নিজের অর্থে চিকিৎসা ব্যয় চালিয়ে আসলাম কিন্তু এখন আর পারছি না।
যদি দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে আগামীতে ব্যথা, যন্ত্রনা ও অন্যান্য নানা সমস্যার কারণে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারবো না। আমি সুস্থ পুরোপুরি সুস্থ হতে না পারলে আমার পরিবার চলবে কি করে? আমার দুটি ছোট মেয়েকে নিয়ে বাহিরে যেতে পারছি না। তাই সরকারি ভাবে চিকিৎসা সহায়তা পেলে হয়তো উন্নত চিকিৎসায় আমি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারতাম।