সোনার দেশ ডেস্ক:পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছে বলে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জানান ইমরানের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা।
যদি শনিবার রাতের মধ্যে সরকার ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা না হয় তবে তিনি পিটিআই সমর্থকদের দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও বলেছেন।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার ইমরান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, উভয় ভোটে জয় দাবি করেন।
ইমরানের কারাদণ্ড হওয়ায় বর্তমানে পিটিআই প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন গহর খান। যিনি ইমরানের আইনজীবীর দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি পাকিস্তানের ‘সব প্রতিষ্ঠানকে’ তার দলের ম্যান্ডেটের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যদি শনিবার রাতের মধ্যে ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা না হয় তবে পিটিআই রোববার দেশজুড়ে সরকারি দপ্তরগুলোর সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন
করবে।
অন্যদিকে নওয়াজ শরিফ শুক্রবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বলেন, ভোটে তার দল এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়লাভ করেছে এবং তারা জোট সরকার গঠনের জন্য অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা পর্যন্তও চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। এখনো ২৬৫টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনের ফল পাওয়া যায়নি।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটের সর্বশেষ যে ফলাফল দেওয়া আছে তাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা একশো টি আসন, নওয়াজের দল পিএমএল-এন ৭২টি আসনে জয়লাভ করেছে।
বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ৯০ জন পিটিআই সমর্থিত বলে রয়টার্সের একটি বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।
পাকিস্তানে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য নয়। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ৭০টি আসন সংরক্ষিত। সে অনুযায়ী, নওয়াজের দল ২০টি আসন পাবে।
এদিকে ইমরানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি রয়টার্সকে বলেছেন, আগামীকালের মধ্যে দল ঘোষণা করা হবে এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের দলীয় ব্যানারে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারে না। তাদের অবশ্যই কোনো দলে যোগ দিতে হয়।
ওয়াটসঅ্যাপে অডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি আরো বলেন, “বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অন্য কোনো দলে ভিড়ে যাবে তেমন ভয় আমাদের নেই। কারণ, এরাই সেই ব্যক্তি যারা গত ১৮ মাস সংগ্রাম করেছে এবং সব ধরনের দমন-নিপীড়ন সহ্য করছে।”
তবে যারাই সরকার গঠন করুক অবশ্যই জোট সরকার গঠন করতে হবে। কারণ, কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনের ধারে কাছে নেই।
ইমরান ও নওয়াজের দলের পাশা-পাশি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপুলস পার্টি (পিপিপি) অন্তত ৫৩ টি আসনে জয়লাভ করেছে।
বাকি আসনগুলোতে ছোট ছোট দল বা অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
তাই বোঝাই যাচ্ছে, সরকার গঠন নিয়ে আগামী কয়েকদিন জোর আলোচনা চলবে। এরপর পার্লামেন্টে ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ