শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন সাঁওতালদের কোমরে দড়ি ও হাতকড়া পরানো নিয়ে লুকোচুরি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
আহতদের স্বজনরা বলছেন, হাই কোর্টের নির্দেশের পর পুলিশ সাংবাদিকদের দেখলে হাতকড়া খুলে দেয়, সাংবাদিকরা চলে গেলে ফের হাতকড়া লাগিয়ে দেয়। একটি রিট আবেদনে সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাঁওতালদের কোমর থেকে দড়ি ও হাতকড়া খুলে দিতে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রতিবেদন আকারে হাই কোর্টে জমা দিতে বলা হয়েছে ঢাকার পুলিশ কমিশনার, রংপুরের ডিআইজি ও গাইবান্ধার পুলিশ সুপারকে।
গাইবান্ধায় গত ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হওয়া ছাড়াও যারা আহত হন, তার মধ্যে দুজন রংপুর মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। তারা দুজন চরণ সরেন ও বিমল কিসকো পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামি। তাদের পুলিশ পাহারায় চিকিৎসার মধ্যে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসার পর হাই কোর্টে ওই রিট আবেদনটি হয়।
দুপুরে আদালতের নির্দেশের পর সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে হাতকড়া পরা ও খুলে দেয়ার লুকোচুরির কথা আহতদের স্বজনের কাছে জানা যায়।
বিমল কিসকোর স্ত্রী জিজিলিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাংবাদিকরা আসার আগেই পুলিশ হাতকড়া ও কোমরের দড়ি খুলে দেয়। সাংবাদিকরা চলে গেলে আবার তা পরিয়ে দেয়া হয়।” একই অভিযোগ করেন চরণ সরেনের স্ত্রী পানি মুরমু।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলামও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা যতবার গেছি ততবারই হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বাঁধা দেখতে পেয়েছি।” রংপুর মেডিকেলে হাতকড়া ও
পাহারায় থাকা এক পুলিশ কনস্টেবল নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাংবাদিকেদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। উপরের নির্দেশে সাংবাদিক আসার আগেই আমাদের মোবাইলে জানানো হয়। আমরা তাৎক্ষণিক হাতকড়া ও কোমরের দড়ি খুলে দেই। সাংবাদিকরা চলে গেলে পুনরায় হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বেঁধে দেই।”
তবে হাসপাতাল সংলগ্ন ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই দিবাকর রায় বলেন, “আগে হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বাঁধা ছিল। গত (রোববার) রাতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল হাসাপাতালে আহতদের দেখতে আসার পর তা খুলে দেয়া হয়েছে।
“আজ বিকালে কর্তব্যরত কোনো কনস্টেবল নিরাপত্তার স্বার্থে হয়ত আসামিদের হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বেঁধে দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এই আসামিদের বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি।
“আসামিরা আমার নয়। তারা গাইবান্ধার পুলিশ সুপারের,” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন তিনি।- বিডিনিউজ