সাওতালদের ভূমিস্বত্ব

আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০১৬, ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন
সমতলের আদিবাসী হিসাবে পরিচিত সাওতাল, গারো, হাজংসহ নানা সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠি রয়েছে। এই জনগোষ্ঠির ভূমি মালিকানার বিষয়টি খুবই জটিল ও বিরোধপূর্ণ। বাংলাদেশের রংপুর, রাজশাহী বিভাগ এবং খুলনা বিভাগের অংশ বিশেষে রয়েছে আদিবাসী সাওতাল জনগোষ্ঠির বসবাস। এই অঞ্চলটিতে সাওতাল জনগোষ্ঠির ভূমিস্বত্ব বিষয়টিতে রয়েছে  নানা ধরনের জটিলতা। ফলে দেখা যায়, কোন কোন সময় সাওতাল জনগোষ্ঠির সাথে সরকার বা ভূমিদস্যুদের সংঘর্ষ। আর ভূমি সংক্রান্ত সংঘর্ষে প্রাণ ও সম্পদ  হারাতে হয়েছে সাওতালদের। বসতি স্থাপনের ইতিহাস বিচার বিশ্লেষণ করলে প্রমাণ মিলবে উল্লিখিত অঞ্চলের আদি অধিবাসী এই সাওতাল জনগোষ্ঠি। কারণ ভাষা এবং বৈশিষ্ট্যে সাওতালরা বাংলাদেশের অন্য অনেক আদিবাসীর মত মঙ্গোলিয় গোত্রের নয়। সাওতালরা কথা বলে সাওতালী ভাষায়। এই ভাষাটি অষ্ট্রো-এশিয় ভাষাগোষ্ঠির অন্তর্গত। সাওতালদের মধ্যম গড়নের আকৃতি, ত্বকের গাঢ় রঙ, চ্যাপ্টা নাক, পুরু ঠোট এবং কোকড়ানো চুলÑ এই বৈশিষ্ট্যের কারণে সাওতালরা অষ্ট্রেসীয় নৃতাত্বিক  উৎস নির্দেশ করে। আর এই জনগোষ্ঠির মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছিল দ্রাবিড়দেরও আগে অষ্ট্রেলিয়া এবং সন্নিহিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপমালা থেকে। দেহ কাঠামোর বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে সাওতালদেরকে বিশুদ্ধ প্রাক-দ্রাবিড়িয় গোষ্ঠির প্রতিনিধি বলে মনে করা হয়। তবে অষ্ট্রেলীয় কৌমগুলোর সাথে সাওতালদের বেশ মিল লক্ষ্য করা যায় বলে তাদেরকে আদি অষ্ট্রেলীয় বলা হয়। ধারণা করা হয়, সুঁতার (ঝড়ড়হঃধৎ) কথাটি থেকে সাঁওতাল শব্দের উদ্ভব। সুঁতার বাঙালি প্রদত্ত খেতাব। সাওতালরা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ আদি জনগোষ্ঠি। তবে উপমহাদেশে এদের প্রধান নিবাস রাঢ়বঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যার অরণ্য অঞ্চল এবং ছোট নাগপুরে। তবে ১৮৮১ সালের আদম শুমারিতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম জেলাওতে সাওতাল আদিবাসী রয়েছে। ১৯৪১ সালের শুমারিতে বাংলাদেশে সাওতাল জনগোষ্ঠির জনসংখ্যা ছিল প্রায় আট লক্ষ কিন্তু ১৯৯১ সালের আদম শুমারিতে দেখা যায়, বাংলাদেশে সাওতাল জনসংখ্যা দুই লাখের একটু বেশি আর ২০০১ সালের শুমারিতে প্রকৃত জনসংখ্যাটি জানা যায়নি। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয়টি হলো ১৯৪১ থেকে ১৯৯১ এই ৫০ বছরের সাওতাল জনগোষ্ঠির জনসংখ্যা এদেশে কমেছে। সাওতালরা মূলত অস্টিক ভাষাভাষি আদি-অষ্ট্রেলীয় (প্রোটো-অষ্ট্রালয়েড) জনগোষ্ঠির বংশধর এবং এই উপমহাদেশের প্রকৃত আদি বাসিন্দা। সাওতালরা এই উপমহাদেশের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা এবং কৃষি সংস্কৃতির জনক ও ধারক। আদি মানুষের জীবন প্রণালী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মানুষ যখন পশু শিকার বাদ দিয়ে কৃষি উৎপাদনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করে তখন মানুষ উর্বর ভূমির সন্ধানে পৃথিবীর এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করে। ধারণা করা হয় যে, এক সময় প্রোটো-অষ্ট্রালয়েড জনগোষ্ঠির বংশধরা এই অঞ্চলে এসে কৃষি আবাদ শুরু করে।আবার অনেক নৃতাত্বিকদের মতে, এক সময় সাওতালরাই বাস করতো উত্তর ভারত থেকে শুরু করে প্রশান্ত মহাসাগরের ইস্টার দ্বীপ র্পযন্ত। আনুমানিক ৩০ হাজার বছর পূর্বে এরাই ভারত থেকে অষ্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিল। তবে সকল নৃতাত্বিকরাই এই বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন যে, সাওতালরাই উপমহাদেশের আদিম অদিবাসী। আর সাওতালরাই আর্যদের আগ থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে বসবাস করছে এ বিষয়ে কারো দ্বিমতও নেই। সাওতালদের আদিনিবাস ছিল হাজারীবাগ, মালভূম (চায় চাম্পা) এবং বিহারের আশে পাশে বিভিন্ন অঞ্চলে। মোঘল আমলে এরা হাজীবাগ হতে বিতাড়িত হয়ে সাওতালরা চলে আসে উরিষ্যার সাওতাল পরগণায়। কৃষি আবাদির প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে তা থেকে জানা যায়, সাওতাল অদিবাসীরা বহু কষ্টে করে বন-জঙ্গল সাফ করে গড়ে তুলেছিল বঙ্গ দেশের অনেক জনপদ। অতীতে যে মাটিতে কোন দিন জনমানবের পদচিহ্ন পড়েনি সে মাটিকে সাওতালরা বাসযোগ্য করে তুলেছিল। আর সেই মাটিতে উৎপন্ন করেছে ধান, গম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের সবজি এবং সোনালী ফসল। সাওতালসহ আদিবাসী অনেক সম্প্রদায়ের বিশ্বাস প্রকৃতির এই ভূমি তাদের যারা শ্রম দিয়ে এ থেকে শস্য উৎপাদন করবে। উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাওতালদের বসবাস গড়ে উঠে। ঝোপঝাড় সাফ করে এরাই তৈরি করে কৃষিজমি। নিজ স্বাধীনতায় নিজস্ব প্রথা অনুযায়ী অনেকটা কমিউনিটি বেজড নিয়মে কৃষি উৎপাদনে এই সম্প্রদায় জড়িত। তাই এদের মাঝে ব্যাক্তি মালিকানায় ভূমি ব্যবস্থাটা ছিল অনুপস্থিত। মুঘল আমল থেকে শুরু করে বৃটিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থার পূর্ব পর্যন্ত এই জনগোষ্ঠির ভূমি ব্যবহার বা মালিকানা নিয়ে কোন সমস্যা দেখা যায়নি।
বাংলার ইতিহাস থেকে জানা যায়, দেওয়ানি বাংলায় কোম্পানি যে শোষণ ও উৎপীড়নের রাজ্য কায়েম করেছিল তাতে বিট্রিশ সরকার কোন ভ্রুক্ষেপ করেনি কিন্তু ১৭৬৯-৭০ সালের মহাদুর্ভিক্ষের কারণে বৃটিশ সরকার বাধ্য হয়ে কোম্পানির বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ করে। ১৭৭৩ সালের রেগুলেটিং অ্যাক্টের মাধ্যমে বৃটিশ পার্লামেন্ট বঙ্গরাজ্যে হস্তক্ষেপ করে। মাার্কিন বিপ্লবের পর বৃটিশরা আমেরিকা থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশকে তাদের বিকল্প কলোনি হিসাবে চিহ্নিত করে। ১৭৮৪ সালে পাস করা হয় পিট এর ভারত আইন, যার মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বঙ্গরাজ্যে বৃটিশ সরকারের কর্তৃত্ব আরো দৃঢ় হয়। ওই সময় লর্ড কর্নওয়ালিসকে বৃটিশ পার্লামেন্ট গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত করে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তিনি একটি স্থায়ী ভূমি ব্যবস্থা ও দক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গরাজ্যকে একটি শক্তিশালী ঔপরিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত করবেন। পার্লামেন্টের নির্দেশ অনুযায়ী লর্ড কর্নওয়ালিস ত্বরিৎ গতিতে বঙ্গরাজ্যের ভূমি ব্যবস্থা ও প্রশাসনের সংস্কার করেন। চিরস্থায়ী ব্যবস্থার মাধ্যমে জমিদার শ্রেণির সৃষ্টি করে। ভূমির একচ্ছত্র মালিকানা করা হয় জমিদারদের। আর জমিদারদের উপর সরকারের রাজস্ব দাবি চিরকালের জন্য স্থির হয়ে যায়। কর্নওয়ালিসের এই ব্যবস্থা প্রচলনের অন্তর্নিহিত কারণ ছিল এদেশে বৃটিশদের একটি অনুগত শ্রেণির জন্ম দেয়াÑ যারা বংশানুক্রমিকভাবে বৃটিশদের অনুগত থাকবে। আর এই জমিদার শ্রেণির ভূমি রক্ষায় বিচার, প্রশাসন এবং পুলিশি ব্যবস্থা সরকার গড়ে তুলে। আর এই ব্যবস্থার ফলে সাওতালরা তাদের অধ্যুষিত এলাকায় ভূমি অধিকার হারাতে শুরু করে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আগে সাওতালদের গ্রামগুলিতে কোন জমিদার বা ভূমালিক ছিল না। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে সাওতালদের বন-বাদাড় কেটে আবাদযোগ্য করে গড়ে তুলা ফসলি জমির মালিক হয়ে যায় জমিদারা। শুধু মালিক হয়ে জমিদাররা বসে থাকেনি, তারা নানা প্রকারের নির্যাতন শুরু করে সাওতালদের উপর। সাওতালরা যে জমি বনজঙ্গল কেটে ফসল ফলানোর উপযোগী করেছিল তা দখল করে নেয় জমিদার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত জোতদার এবং তালুকদাররা। তাদের এই অনৈতিক কাজে সহায়তা করে বৃটিশ সরকার। এর ফলে সাওতালরা পরিণত হয় ভূমি মালিকদের বর্গাদার বা কৃষিভৃত্যে। তাছাড়া বৃটিশ সরকার কর্তৃক মুদ্রাপ্রথা চালু হওয়ায় সাওতাল তথা সারা বাংলার গ্রামগুলির প্রাচীন বিনিময় প্রথায় ব্যত্যয় ঘটে। মুদ্রার প্রচলনের সুযোগে মহাজন, ব্যবসায়ীরা সাওতাল গ্রামগুলিতে ঢুকে পড়ে। বাংলাদেশে আদিবাসী হিসাবে যাদেরকে আখ্যায়িত করা হয় তাদের মধ্যে সাওতাল জনগোষ্ঠিই সবচেয়ে সহজ-সরল, অত্যান্ত নিরীহ এবং শান্তিপ্রিয়। বৃটিশ শাসকদের সহায়তায় এদেশিয় বৃটিশ কর্তৃক সৃষ্ট জমিদার, জোতদার, তালুকদাররা মুনাফা অর্জন করতে গিয়ে সাওতালদের দৈনন্দিন জীবন-যাপন প্রক্রিয়ায় নানা অত্যাচার শুরু করে। এসব কারণে বিভিন্ন সময়ে সাওতালরা বিদ্রোহী হয়ে উঠে। নানা বিদ্রোহ করার পরও সাওতালরা তাদের নায্য অধিকারটুকু আজ পর্যন্ত পায়নি। বৃটিশরা যখন এদেশিয় সাধারণ মানুষকে ভূমিস্বত্বের মালিকানা দেয় তখন তারাই ভূমির মালিকনাপ্রাপ্ত হন তারাই, যারা সরকারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পেরেছিল। সাওতালরা বরাবরই অনভ্যস্থ এ ধরনের তদবিরবাজিতে। বৃটিশ সরকার বিভিন্ন সময় নানা জরিপ বা প্রক্রিয়ায়র মাধ্যমে এদেশে ভূমির মালিকানা নির্ধারণ করেন। আজও বৃটিশদের নির্ধারণ করা পদ্ধতিতে ভূমির মালিকানা স্বত্ব বহাল আছে। ১৯৪০ সালের আরএস হওয়ার সময়ও সাওতালরা তাদের ভোগ করা কাগজপত্র যথাযথভাবে ঠিক করতে পারেনি। কারণ এই জনগোষ্ঠি ওই সময় ছিল নিরক্ষর। ওই সময়টায় অনেকেই সাওতালদের সরলতার সুযোগে এদের ভোগ করা ভূমির মালিকানা নিজ নামে করে নেয়। ফলে সাওতালদের ভূমির জটিলতা বেড়ে যায়। সাওতাল জনগোষ্ঠির অধিকার বিষয়ক আন্দোলনের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, সাওতালরাই এদেশের পরাধীনতার শৃংখল ভাঙ্গার প্রথম মুক্তি সৈনিক। ১৮৫৭ সালের সিপাই বিদ্রোহের আগে বৃটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে সাওতালরা বিদ্রোহ করে। মহাজন, দালাল, জমিদার কর্তৃক নিরীহ আদিবাসীদের শোষণ ও নির্যাতনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করতো বৃটিশ সেনাবাহিনী। আজ থেকে প্রায় ১৬১ বছর আগে সিধু, কানু, চাদ, ভৈরব চার ভাইয়ের নেতৃত্বে বৃটিশ উপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সাওতাল সম্প্রদায়। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন বৃটিশ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে সিধু, কানু, চাদ, ভৈরবের নেতৃত্বে সাওতালরাÑ আর তা শেষ হয় ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে। এই যুদ্ধে সাওতালরা ব্যবহার করেছিল তীর ধনুক আর বৃটিশ সেনারা ব্যবহার করেছিল কামান বন্দুক। এটাকে সাওতাল হুল বিদ্রোহ বলা হয়। এই  যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার সাওতাল যোদ্ধা শহিদ হয়। সাওতাল বিদ্রোহের আগুনে বৃটিশ রাজদের মসনদ কেঁপে উঠেছিল। এই যুদ্ধে বীর সিধু, কানু, চাদ, ভৈরব চারভাই পর্যায়ক্রমে বৃটিশদের হাতে শহিদ হন। ১৮৫৬ সালে যুদ্ধ এবং বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধের পর সাওতালদের সমস্যা বিবেচনা করে বৃটিশ সরকার আদিবাসী সাওতালদের জন্য একটি জেলা বরাদ্দ দেন। জেলাটির নাম ডুমকা, তবে সাওতাল পরাগণা হিসাবে পরিচিত। ১৮৮৫ সালে বেঙ্গল টেনান্সি অ্যাক্ট অনুযায়ী আদিবাসীরা তাদের জমি সরকারের অনুমোদন ছাড়া বিক্রি করতে পারতো না। এখনও এই আইন বলবৎ আছে। বর্তমানে ভারত সরকার ঝাড়খন্ড নামে আদিবাসীদের জন্য একটি পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছে।
তাছাড়া পাক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আন্দোলন প্রথম সূত্রপাত ঘটায় সাওতাল কৃষকরা। ইলামিত্রের নেতৃত্বে নাচোলের কৃষক বিদ্রোহের সংগ্রামী যোদ্ধা ছিল সাওতাল কৃষক। পাকিস্তানি শাসকদের দোসরদের বিরুদ্ধে তেভাগা আন্দোলনের মাধ্যমে পাক শাসক গোষ্ঠির প্রতি অনাস্থা প্রদান করে সাওতাল জনগোষ্ঠি। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের অবদান উল্লেখ করার মত। অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অধিকার আদায়ের লক্ষে সাওতাল অধিবাসীরা বহু আন্দোলন বিদ্রোহ করেছে।
বৃটিশ বিতাড়িত হলো, পাক হায়েনারা পালালো, দেশ স্বাধীনতা লাভ করল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সাওতালদের ভূমি অধিকার বিষয়ক সমস্যাটির কোন সমাধান  হলো না। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্র থেকে  জানা যায়, ১৯৪৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬৭ বছরে সাওতাল জনগোষ্ঠির সম্পদ বেহাত হয়েছে ৫ হাজার ১৯০ কোটির টাকার। আর এই সময়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৪০০ একর ভূমির দখল হারাতে হয়েছে সাওতালদের। তাছাড়া প্রতিবছরই ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে মারা যাচ্ছে সাওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ। সরকারের উচিত এই ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন করা। ১৯৪০ সাল পরবর্তী এবং পূর্ববর্তী  সময়ের ভুমি মালিকানার নিরীখে সাওতালের ভূমি বিরোধ মিমাংসা করে তার মালিকানা প্রদানের ব্যবস্থা করা।
লেখক :- কলামিস্ট