মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
ছাত্রলীগ কী পেল?
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়Ñ মাত্র সাত দিনের জন্য। কেন বন্ধ করতে হলো? কারণ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ- উত্তেজনা। ফলশ্রুতিতে রুয়েট বন্ধের সিদ্ধান্ত। দৈনিক সোনার দেশসহ দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষ লিপ্ত হয়। শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিকেল তিনটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। বন্ধের দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাশ-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। হল খুলবে আগামী ১৮ নভেম্বর সকাল ৯টায় এবং পরদিন (১৯ নভেম্বর) থেকে ক্লাস-পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। বন্ধের কুফলভোগী সাধারণ নিরীহ শিক্ষার্থীরা। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারও করে না কিংবা সামান্য ল্যাপটপ চুরির ঘটনাকে বা ঠুনকো কোনো ঘটনার দায় নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় না। কারণ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে শিক্ষা অর্জন করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের পাঁচটি এবং ছাত্রীদের একটি আবাসিক হল আছে। ছয়টি হলে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা আছে। হঠাৎ করে শুক্রবার সকালে হল বন্ধের ঘোষণা হওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েন। নিশ্চয় তাদেরকে ভীষণ দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে।
আর যারা সংঘর্ষে লিপ্ত হলো, তারাই বা কীভাবে উপকৃত হলো। এ ক্ষেত্রে আত্মসমর্থনের নানা যুক্তি তাদের কাছে থাকতে পারে তবে সামগ্রিক বিবেচনায় লাভবান কেহই হয়নি। বরং ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের জন্য এটা খুবই লজ্জার যে, তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে হলো। এতে লেখাপড়ার ধারাবাহিকতা নষ্টের সাথে সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনোকষ্টের কারণ হলো। ছাত্রলীগ নেতৃত্ব সেটাই নিশ্চিত করবে যে, বিশ্ববিদ্যালয় যাতে কোনোভাবেই বন্ধ না হয়। বন্ধ হওয়ার মত কোনে পরিস্থিতি অন্তত তারা সৃষ্টি করবে না। এতে একদিকে দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ বাঙালি জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে সবসময় পাশে থেকে গণমানুষের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেÑ সেই সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। যে মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সরকারে থেকে দেশকে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যাচ্ছে এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার নিশ্চিত করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গণমানুষকে সম্পৃক্ত করছেÑ সেই মুহূর্তে ছাত্র লীগের এ ধরনের কর্মকা- একঅর্থে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ারই শামিল। যারা বা যেসব ছাত্রনেতা এসব বুঝবে না তাদের অন্তত ছাত্রলীগ করা উচিৎ নয়। যারা সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, বিব্রত করে তারা ক্ষমতাসীন দলে থাকার যোগ্য নয়।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ খুবই প্রণিধানযোগ্য। পরবর্তীকালে হঠকারী কার্যক্রম যাতে ছাত্রলীগের নামে কেউ না করতে পারে তারা সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিবেন।