বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
দলের বাকি ৪ সদস্য ফিরে গেছেন হোটেলে। শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সের গ্যালারিতে বসে আছেন হুগো ফন ডার ও এল সানতিং। এক জনের বাম হাতের কনুইয়ের নিচ থেকে কব্জি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ বাধা, অন্যজনের একই হাতের বুড়ো আঙ্গুলে। নেদারল্যান্ডসের এ দুই খেলোয়াড় অপেক্ষায় হাসপাতালে যাওয়ার। গাইড এসে ডাক দিলেই উঠে বসবেন অ্যাম্বুলেন্সে। রবিন ফন পার্সি-অ্যারিয়েন রোবেনের দেশ থেকে তারা এসেছে বাংলাদেশে রোলবল বিশ্বকাপ খেলতে। মস্তবড় খেলোয়াড় তো বটেই। তা নাহলে দেশটির বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয় কি করে?
ভুল ভাঙলো যখন হুগো ফন ডার বললেন, আমরা মাত্র দুই সপ্তাহ আগে রোলবল খেলা শুরু করেছি। তার কথা কেড়ে নিয়ে পাশেরজন বললেন, ‘আমি তো এক সপ্তাহ আগে খেলা শুরু করেছি।’ সানতিং আঙ্গুলের কর গুনে বললেন, বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছি, তার আগের বৃহস্পতিবার রোলবল খেলা শুরু করেছি। বলতে বলতে তারাও যে হেসে খুন! পৃথিবীর সৌভাগ্যবান খেলোয়াড়ই বলতে হবে এ দুদজনকে। একজন এক সপ্তাহ, আরেকজন দুই সপ্তাহ আগে খেলা শুরু করেই চলে এলেন বিশ্বকাপ খেলতে।
দুদজনই লেখাপড়া করেন দেশটির আর্টরেক শহরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শখের বসে স্কেটিং করেন। কেউ একজন প্রস্তাব দিলেন, ‘চল রোলবল খেলি, বিশ্বকাপে যাবো’। ব্যাস তারা শুরু করলেন রোলবল খেলা। সাতদিন পার হতে না হতেই চেপে বসলেন বাংলাদেশগামী উড়োজাহাজে। এক আর দুই সপ্তাহের খেলোয়াড় চলে এলেন ঢাকায় বিশ্বকাপ খেলতে।
নেদারল্যান্ডস এ বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে শুধু পুরুষ বিভাগে। খেলোয়াড় এসেছেন মাত্র ৬ জন। বিকেলে জাম্বিয়ার বিপক্ষে খেলতে গিয়ে পড়ে আঙ্গুলে ব্যাথা পেয়েছেন সানতিং। তারপর জাম্বিয়ার ৬ জনের বিপক্ষে খেলতে হয়েছে নেদারল্যান্ডসকে ৫ জন নিয়ে। তারপর আঘাত লেগে হাত ফুলে গেছে হুগোর। এমন অবস্থায় ম্যাচটাই হারতে হয়েছে ডাচদের।
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরির মতোই অবস্থা তাদের। জীবনের প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ খেলতে নেমেই আহত। নেদারল্যান্ডসের পরের ম্যাচ চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে। তারা দু’জন খেলতে না পারলে কি হবে? ‘দেখি হাসপাতালে যাই। ডাক্তার কি বলেন। খেলতে না পারলে আর কি হবে? ৪ জনেই খেলবে’- বলেই হাসতে হাসতে উঠে গেলেন অ্যাম্বুলেন্সে। বিশ্বকাপ হলেও তাদের জন্যতো এটা শুধুই এক মজার ভ্রমণ।