সাপাহারের আমবাগানে মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণ, পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগানিরা

আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৫, ১২:৫৯ অপরাহ্ণ


বাবুল আকতার, সাপাহার (নওগাঁ)প্রতিনিধি:


সাপাহার বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বরেন্দ্র ভূমি নওগাঁর সাপাহার উপজেলা। দিন দিন এই অঞ্চলের আমের উৎপাদন বেড়েই চলেছে। উপজেলায় গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের আমের সোনালী মুকুল। সাপাহারের আমবাগানে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ।

আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ততা বেড়েছে আমচাষীদের ।
দেশের মোট উৎপাদিত আমের ৬০ শতাংশ আম এই জেলায় উৎপাদিত হয়ে থাকে। এ আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশ ও রপ্তানি হয়ে থাকে সুনামের সাথে। আমের মিষ্টতার স্বাদ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে থাকায় আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত এই অঞ্চল।

সরেজমিনে,সাপাহার সদর ইউনিয়ন সহ তিলনা ,শিরন্টি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যেই অধিকাংশ গাছে উঁকি দিতে শুরু করেছে আমের মুকুল। কিছু কিছু বাসাবাড়ির গাছেও দেখা গেছে আমের মুকুল।

আম মৌসুমি অর্থকরি ফল হিসেবে গুরুত্ব পেলেও বর্তমানে এটি শিল্পজাত পণ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রাকৃতিক ও ভৌগলিক অবস্থান এবং আম চাষের উপযোগী আবহাওয়ার কারণে এই অঞ্চলে বেড়েছে আম উৎপাদন। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে আম রপ্তানি হচ্ছে।

সাপাহার সদর ইউনিয়নের মদনসিং গ্রামের আমচাষি আশরাফুল হক জানান, এবছর ১৫০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করেছেন তিনি। অধিকাংশ বাগানে আমের মুকুল দেখা দিয়েছে। মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো উৎপাদনের আশা করছেন।

উপজেলার পিছল ডাঙ্গা গ্রামের আমচাষি মমিনুল হক বলেন, এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় বাগানে ইতোমধ্যেই মুকুল দেখা দিয়েছে এবং তুলনামূলক কিটনাশক কম ব্যবহার হচ্ছে।

অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৯ হাজার ২৮০হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এখন আমের মুকুল শুরুর সময় প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি ইমিডাক্লোপ্রিড এবং ২গ্রাম কার্বেনডাজিম ছত্রাকনাশক প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে।

উপজেলায় আরও ১৫-২০ দিনে হয়তো সব গাছেই মুকুল আসতে শুরু করবে। মুকুল ফোটার সময় মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে পুষ্প মুঞ্জরিতে পাউডারি মিলডিউ অ্যানত্রাকনোজ রোগের আক্রমণ হতে পারে। এতে গাছের পাতা মুকুল ও কচি আমে কাল দাগ পড়ে সেক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কৃষি বিষয়ক যেকোনো পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) সেলিম আহমেদ বলেন, আম রপ্তানির পথ সুগম করতে এই অঞ্চলে ওয়্যার হাউজ (প্যাকিং হাউজ) স্থাপনের বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আমচাষীদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে এবং এলাকায় অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ