সাপাহার আমের হাট ক্রেতা বিক্রেতার পদচারণায় জমজমাট

আপডেট: জুন ১৬, ২০২৫, ১:৫৭ অপরাহ্ণ

সাপাহার (নওগাঁ)প্রতিনিধি:


বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত নওগাঁর সাপাহার আমের হাট ইতোমধ্যে ক্রেতা ও বিক্রেতার পদচারণার বেশ সরগরম হয়ে উঠছে। যদি ও ইদের আগেই এই হাটে আমের বেচাকেনা শুরু হয়েছে, তবে ইদের পরেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমের পাইকারদের এই হাটে পুরোদমে উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

আবহাওয়াজনিত কারণে এবার ম্যাংগো ক্যালেন্ডার এর সূচি ছাড়াই সকল জাতের আম পাকতে শুরু করে, ফলে এই হাটে সকল জাতের আমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২২ মে গুটি জাতের আমের মধ্যে দিয়ে আমপাড়া কার্যক্রম শুরু হয় তবে ধারাবাহিকভাবে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত, নাক ফজলি, ল্যাংড়া , হাঁড়িভাঙ্গা চলমান থাকলেও সময়ের আগেই দেখা মেলেছে আম্রপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগো আমের।

গত কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারণে বাগানে আম পাকতে শুরু করছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। আর একই কারণে সকল জাতের আম একসাথে বাজারে আসায় চাহিদা কমেছে সাথে দামও কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেজিতে আম ক্রয়-বিক্রয়ের নির্দেশনা দেওয়া হলেও এর বাস্তবায়ন এখনো কোন মোকামে বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি।

সরেজমিনে রাজশাহী বিভাগের বিখ্যাত আমের হাট রহনপুর, ভোলাহাট ও কানসাটে গিয়ে কোথাও কেজিতে আম ক্রয়ের কোন বাস্তব চিত্র দেখা যায় নি। কোথাও ৫২ কেজিতে আবার কোথাও ৫৪ এবং ৫৫ কেজিতেও মণ হিসেবে আম কেনা হচ্ছে। বর্তমানে আমের দাম এবং ওজন ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে চরম অসন্তোষ।

সোমবার (১৬ জুন) আমোর বানিজ্যিক রাজধানী সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ হিমসাগর ১৪০০-১৬০০ টাকা, নাক ফজলি ১৩০০-১৮০০ টাকা, ল্যাংড়া ১২০০-১৫০০টাকা, ব্যানানা ম্যাংগো ৩৫০০-৪২০০ টাকা, হাড়ি ভাংগা ১৫০০-২৫০০ টাকা এবং আম্রপালি ১৮০০-৩৫০০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবছর ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

আমের হাটে আম বিক্রি করতে আসা উপজেলার ওড়নপুর গ্রামের আমচাষি মামুন বলেন, এবছর আমের দাম অনেক কম। গত বছর যে আম ৪০০০-৪৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি সে আম এ বছর ২২০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে । এ দামে আম বিক্রি করে কীটনাশক খরচ ই উঠবে না।এভাবে চলতে থাকলে লোকসান গুনতে হবে।

রহনপুরের আম ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের সাথে আলোচনা করেই আমের দাম ও ওজন নির্ধারণ করা হয়। সকল ওজনের ক্ষেত্রে ক্যারেট সহ মোট ওজন ধরা হয়। সেক্ষেত্রে ৫০ কেজি ৫২ কেজি মন হিসেবে কেনা হচ্ছে সাপাহারের বাজারে।

সাপাহার উপজেলা আম আড়ৎদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, তুলনামূলকভাবে এবছর আমের ফলন কম হলেও আমের সাইজ অনেক ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে আমের বেপারীরা কেনা বেচা শুরু করে দিয়েছে। ওজন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,পাশ্ববর্তী রহনপুর, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর এবং কানসাটের ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৫২ কেজিতেই মণ হিসেবে আম ক্রয় করছেন।

যার কারণে এ বাজারে আম ক্রয় করতে আসা অন্য ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। তাই ওজনের বিষয়টি যদি সারাদেশে একই রকম রাখা হয়, তাহলে আম চাষী ও আড়ৎদারের সুবিধা হবে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ