সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
বর্ষীয়ান রাজনীতিক, ভাষাসৈনিক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মো. জিল্লুর রহমান ২০১৩ সালের ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মো. জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মেহের আলী মিঞা ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং তৎকালীন ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের চেয়্যারম্যান ও জেলা বোর্ডের সদস্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর এবং এলএলবি ডিগ্রিধারী জিল্লুর রহমান বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণআন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন।
তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়্যারম্যান ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান হন। ১৯৫৬ সালে কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও ষাটের দশকে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য হিসেবে সংবিধান প্রণয়নে অংশ নেন। একই বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর চার বছর কারাবন্দি ছিলেন মো. জিল্লুর রহমান। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের পর ১৯৮৪ সালে তিনি আবারও দলের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালের কাউন্সিলেও পরপর দুই বার দলের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০২ সালের কাউন্সিলে সভাপতিম-লীর সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
মো. জিল্লুর রহমান ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ছিলেন তিনি। পাশাপাশি সংসদ উপনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
একজন স্বেচ্ছাসেবক হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করে দীর্ঘ ৬২ বছরের রাজনৈতিক পথচলায় দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন মো. জিল্লুর রহমান। তার স্ত্রী আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।