নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহীর পবা উপজেলার মুল সাব-রেজিষ্ট্রার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেছেন গত ফেব্রুয়ারি থেকে। এতে আগে থেকেই সেবায় দুর্ভোগ চরমে। সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দুই কর্মকর্তাকে বসানো হয়েছে। কিন্তু তাদের ‘গা-ছাড়া’ মনোভবে সেবায় নেমে এসেছে স্থবিরতা। এরমধ্যে আবার আসন্ন ইদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই ছুটিতে চলে গেছেন দুই কর্তা। এতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে সেবা। বিপাকে সেবা প্রার্থীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজশাহীর পবা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হলেন আয়েশা সিদ্দিকা। তিনি গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। এ ছুটি চলবে ৬ মাস। সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে জেলা সাব-রেজিস্ট্রারের নির্দেশনায় অতিরিক্ত-দায়িত্ব পালন করছেন, গোদাগাড়ী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার সাদেকুর রহমান ও দূর্গাপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার সাদ্দাম হোসেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সাদেকুর রহমান সপ্তাহের বুধ-বৃহস্পতি ও দূর্গাপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সাদ্দাম হোসেনের রবি-সোমবার পবার দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু গত বুধবার (৩ এপ্রিল) ও বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গোদাগাড়ী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সাদেকুর রহমান অফিসে আসেন নি। আবার ইদের আগে রবি- সোমবার দূর্গাপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সাদ্দাম হোসেন অফিসে আসবেন না বলে সেবাপ্রার্থীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে নির্ধারিত তারিখ ধার্য থাকা সেবাপ্রার্থীরা এসে ঘুরে যাচ্ছেন।
সেবাপ্রার্থীরা অভিযোগ করছেন, মুল সাব-রেজিষ্ট্রার ছুটিতে যাওয়ার পর থেকে এখানকার সেবা ব্যবস্থাই ভেঙ্গে পড়ছে। অতিরিক্ত দায়িত্বে কর্মকর্তারা ঠিকমতো আসেন না। আবার ঠিকমতো কাজও করেন না। তাদের ‘গাঁ-ছাড়া’ভাবে সেবা নিতে এসে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। এরমধ্যে আবার ইদের ছুটি শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকেই অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে পবা উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসেছেন সেবা প্রার্থীরা। কিন্তু সাব-রেজিষ্ট্রার না থাকায় ঘুরে যাচ্ছেন।
এসময় কথা হয় ইসলামী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল কাফীর সঙ্গে। তিনি জানান, বিগত দুইদিন জমি রেজিষ্ট্রির তারিখ নির্ধারণ হবার পরও সাব রেজিষ্ট্রার না থাকায় ঘুরে যেতে হয়েছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) তৃতীয় তারিখটাও ঘুরে যেতে হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিষ্ট্রারদের কল করা হলেও ফোন রিসিভ করেন না। আবারও ১৫ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ তারিখেও হবে কি না শঙ্কায় আছি।
পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এসএম আয়নাল হক জানান, মুল সাব-রেজিষ্ট্রার ছুটিতে যাওয়ার পর বিড়ম্বনা তৈরি হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্বে যারা আছেন তারা বেলা ২ টার পরে দলিল নিয়ে গেলে আর কাজ করেন না। এমন নানা সমস্যার মধ্যেই কাজ করতো হচ্ছে। এরমধ্যে আবার এ মাসের শুরু থেকেই পবা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সেবা বন্ধ। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিষ্ট্রাররা ছুটি নিয়ে নিয়েছেন। ইদের আগে আর সেবা দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা গোদাগাড়ী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার সাদেকুর রহমান এবং দূর্গাপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার সাদ্দাম হোসেনসহ রাজশাহী জেলা রেজিষ্ট্রার মো. শফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেন নি।