সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘু

আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০১৬, ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন
দেশের মানুষের মাঝে বাড়ছে সাম্প্রদায়িক মনোভাব। সাম্প্রদায়িকতার অনুশীলন এখন সর্বত্র। আর এই সাম্প্রদায়িকতাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হচ্ছে সংঘাত। সম্প্রতি বাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হিন্দু ধর্ম পালনকারী বাসিন্দাদের উপর নারকীয় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী জানা যায়, এই ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুকের স্টেটাসকে কেন্দ্র করে। ঠিক অনুরূপ ঘটনা ঘটেছিল রামুতে কয়েক বছর আগে। রামুর ট্রাজেডির সাথে নাসির নগরের ট্রাজেডির সাদৃশ্যতা হুবুহু পাওয়া যায়। নাসিরনগরে প্রথম দফা তা-ব চালানোর দু, তিন দিন পর পুনরায় হামলা করে দুর্বৃত্তরা। একবার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে পুনরায় হামলা করা দুর্বৃত্তদের সাহস দেখে হতবাক হতে হয়। সারাদেশে যখন নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে তখন কী করে কোন খুঁটির জোরে দুর্বৃত্তরা পুনরায় হামলা করার সাহস পায়। প্রথম দফা হামলার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং অন্যান্য গণমাধ্যম গুলিতেও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। প্রশাসনসহ সকল রাজনৈতিকরা নির্যাতিত নাসিরনগরের হিন্দু ধর্ম পালনকারীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেয়ার পরও দ্বিতীয় দফায় বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটে। নাসিরনগরের দুর্বৃত্তের হামলার প্রতিবাদে মুখরিত হয়ে উঠেছিল রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল। দেশের ছোট বড় শহরগুলিতে মানববন্ধন প্রতিবাদ সভা বিক্ষোভসহ নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হয়। রামু ট্রাজেডির পরও এ ধরনের প্রতিবাদে সরব হয়েছিল দেশের সাধারণ মানুষ। রামুর ট্রাজেডির পর কি থেমে আছে সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তদের নগ্ন হামলা? রামু ও নাসিরনগরের হামলার প্্েরক্ষাপট তৈরির নেপথ্য বিষয়বস্তু এক রকমের। সাধারণ মানুষের নানা ধরনের প্রতিবাদী কর্মসূচি কি সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তায়ন রোধ করতে পারছে।  সারা দেশের মানুষ সরব হয়ে প্রতিবাদ জানানোর পরও কেন লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে? এই সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অন্তর্নিহিত কারণ কোথায় লুকায়িত আছে তার রহস্য উদঘাটন করা দরকার। নাসিরনগরের ঘটনার পরপরই দেশের গাইবান্ধা ও হবিগঞ্জে সাম্প্রদায়িক তা-বতা ঘটে। প্রতিটি সাম্প্রদায়িক তা-বতার শিকার জনসংখ্যা অনুপাতে কম সংখ্যার মানুষ যে ধর্ম গুলি পালন করে সেই  ধর্মপালনকারীরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, নাসিরনগরের ঘটনার পর হিন্দু ধর্ম পালনকারীদের ‘মালাউন’ হিসাবে আখ্যা দেন ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি সাসংদ মাননীয় মন্ত্রী ছায়েদুল হক। বিষয়টি নানা মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত সমালোচিত হতে শুরু হলে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় মন্ত্রী বলেন যে, তিনি হিন্দু ধর্ম পালনকারীদের মালাউন বলেন নাই। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিবেন। তিনি বীরদর্পে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ খ-াতে কোন গণমাধ্যম বা ব্যক্তি এগিয়ে আসেন নাই। তাহলে কি মাননীয় মন্ত্রী ঠিক ছিলেন তার চরিত্র হননের জন্য কি এই অপপ্রচার? গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিষয়টি সত্য তথ্য না অপপ্রচার তার কারণটি  উদঘাটিত হয় নাই। প্রশ্ন হলো, তাহলে মাননীয় মন্ত্রীর প্রতি এত কাদাছুড়াছড়ি কেন?  আশ্চর্য হওয়ার মতো বিষয় কেউ কেউ ফেইসবুকে এমনকি  মানববন্ধনে মাননীয় মন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছেন। অপরদিকে মাননীয় মন্ত্রী স্বেচ্ছায় বলেছেন, তিনি যে মালাউন বলেছেন তার প্রমাণ দিতে পারলে তিনি নিজ থেকে পদত্যাগ করবেন কিন্তু কেউ প্রমাণ দিতে এগিয়ে আসল না কেন?  তাহলে বিষয়টি কি হয়ে দাঁড়ায়? একটি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে হাসি ঠাট্টার খেলা এটি? নির্যাতিত মানুষগুলির জীবনমৃত্যু নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি কি যৌক্তিক? যদি গণমাধ্যমগুলি মাননীয় মন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃতি করে প্রকাশ করে থাকে তাহলে ওই গণমাধ্যমগুলির শাস্তি হওয়া দরকার। কারণ সরকারের একজন কেবিনেট মন্ত্রী যিনি সরকার পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন. তাকে নিয়ে এ ধরনের ইয়েলো জানার্লিজম করাটা সরকারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল। এ বিষয়টির কি আদৌ কোন সুরাহা হবে? মন্ত্রীর স্বীকার আর অস্বীকার যাই হোক না কেন, এদেশের হিন্দু ধর্ম পালনকারী মানুষেরা জাতীয়ভাবে ‘মালাউন’ গালিতে ভুষিত হয়ে গেল। মাননীয় মন্ত্রীকে নিয়ে প্রকাশিত মালাউন বিষয়ক সংবাদটির জটিলতা নিষ্পত্তি না হয় তাহলে প্রমাণ হবে যে, এদেশের মন্ত্রীরাও সাম্প্রদায়িকার উর্ধ্বে উঠতে পারেনি। তারাও ধর্মীয় সংর্কীণতার নাগপাশে আবদ্ধ। অথচ এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্য দিয়ে।
প্রতিটি সাম্প্রদায়িক সংঘাতময় ঘটনার পর সারা দেশে হুলস্থুল পড়ে যায়। কেউ কেউ নেমে যান মানববন্ধন করতে, কেউ কেউ প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ করতে, নানা প্রতিবাদী কর্মসূচিতে দেশ মুখরিত হয়ে উঠে।  নিশী কথকরা টিভি চ্যানেলগুলোতে আলোচনা করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। নিন্দা নিন্দা নিন্দা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজনৈতিক অঙ্গন। কথিত সুশীলদের বাক-চাতুর্যের মাধুর্যতায় ভরে উঠে গণমাধ্যম। আর এই সকল ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলি রাজপথে নামার ইস্যু পায়, তাছাড়া সামাজিক নেতা, রাজনৈতিক নেতা ও কথিত সুশীলরা নিজ মুখায়বখানা গণমাধ্যমের বদৌলতে জনগণের সামনে হাজির করার সুযোগ পান? পরিতাপের বিষয়টি  হলো, কেউ এই সাম্প্রদায়িকতার মূল শিকড় উৎপাটনের আন্দোলন করছেন না। বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে সুন্দর সুন্দর কথা বলে বুকে জড়িয়ে ধরে মেল বন্ধনে আবদ্ধ করতে চান দেশের বুদ্বিজীবীসহ রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। যদি গোড়ায় গলদ রাখা হয় আর বুকে জড়ানো, প্রতিবাদী নানা কর্মসূচি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলার আয়োজন করে  বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল ধর্মের মানুষের সম্প্রীতি গড়ে তোলা কি আদৌ সম্ভব হবে? রাষ্ট্র যদি নিজেই কোন একটি নিদির্ষ্ট ধর্মের অনুসারী হয় তাহলে সেখানে অন্য ধর্মের অনুসারীদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগিরক ভাবাটা অমূলক নয়। রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা প্রতিনিধিত্ব করে তাদেরকে অবশ্যই রাষ্ট্রের ধর্মের প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাস করাটা তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।
আমরা দেখি প্রতিটি সাম্প্রদায়িক সংঘাতের পর সকল ধর্মের মানুষকে একীভুত করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরির  প্রচেষ্টা চলে। এই ভ্রাতৃত্বের সেতু তৈরির বিষয়টি কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না। প্রতিটি ঘটনার পর বেশ কিছু ঐক্যতার সুর শুনা যায় কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতে আবার শুরু হয়ে যায় সংঘাত। রাষ্ট্রের  সাংবিধান সম্পূর্ণরুপে ধর্মনিরপেক্ষ না হওয়ার কারণে এ রকমের ভ্রাতৃত্ব বোধের মিলন প্রতিবারেই বালির বাধের ন্যায় ভেঙ্গে যায়। তাই আইনগতগতভাবে রাষ্ট্র তথা সমাজকে হতে হবে ধর্ম নিরপেক্ষ। যখন রাষ্ট্র বা সমাজ ধর্মনিরপেক্ষ থাকে না, তখন রাষ্ট্র বা সমাজের জন্য যে ধর্মটা সংবিধিবদ্ধভাবে থাকে, তার উপর ভর করে ওই ধর্ম পালনকারী মানুষগুলি সমাজে তাদের প্রাধান্য বিস্তারের করে। আর এই প্রক্রিয়াটাই সমাজে মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়ায়। সমাজ বা রাষ্ট্র এর কোন নির্দিষ্ট ধর্ম পালন করা উচিত না কারণ একটি সমাজে বা রাষ্ট্রে নানা রকম ধর্ম পালনকারী মানুষ বসবাস। যেহেতু রাষ্ট্র বা সমাজ তার পরিধিতে বসবাসরত মানুষের অভিভাবকত্ব পালন করে তাই তার কোন নিদির্ষ্ট ধর্ম থাকা উচিত নয়।
বাংলাদেশে বসবাসরত মানুষেরা কতগুলি ধর্ম পালন করে তার সঠিক পরিসংখ্যন বের করাও কঠিন। মোটা দাগে বলা হয় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ,খ্রীস্টান এই চারটি ধর্মের মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই চারটি ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ থেকে অংশ বিশেষ পাঠ করে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। বাংলাদেশে প্রায়  বহু আদিবাসী সম্প্রদায় রয়েছেন, এই সম্প্রদায় গুলিরও নিজস্ব ধর্ম রয়েছে। তারাও এদেশের নাগরিক। কিন্তু কোন অনুষ্ঠানে উল্লিখিত চার ধর্মের বাইরে অন্য ধর্মের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় না। তাই রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন সকল নাগরিকের সমাধিকার দেয়ার লক্ষে। সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব, বিদ্বেষ, সংঘাত রোধ করতে হলে সমাজ ব্যবস্থাকে করতে হবে ধর্মনিরপেক্ষ। বাংলাদেশের শাসক শ্রেণিসহ রাজনৈতিক সমাজিক ও সুশীল সমাজের নেতারা দেশের মোট জনসংখ্যা অনুপাতে কম সংখ্যক মানুষ যে সকল ধর্ম পালন করে তাদেরকে সংখ্যালঘু বলে থাকেন। জনসংখ্যাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করে  সংখ্যালঘু ও সংখ্যা গুরু হিসাবে চিহ্নিত করাটা কি যৌক্তিক? সংখ্যালঘু হিসাবে ধর্ম পালনকারী জনগোষ্ঠিকে চিহ্নিত করার ফলে সমগ্র সমাজ ব্যবস্থাটাকেই বিভক্ত করা হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করা সংখ্যালঘরু বাইরে অন্য সূচকেও বিভক্ত হওয়া সংখ্যালঘু রয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মপালনাকী মানুষদেরকে সংখ্যালঘু বলা হয় ধর্মীয় কারণে। বাংলাদেশে জাতি ও ভাষাগতভাবে কম সংখ্যার মানুষ রয়েছে। ভাষাগতভাবে কম জনসংখ্যার গারো, হাজং, সাওতাল, মাহালী, চাকমা, রাখাইনসহ অনেক আদিবাসী রয়েছে। কিন্তু  তাদের সংখ্যালঘুত্ব  বিষয়টি সামনে এনে সমাধিকারের কথাটি স্পষ্টভাবে কেউ দাবি করেন না। তবে কিছু কিছু এনজিও এদেরেকে দেখিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ এনে নিজেদের আখের গুছিয়ে ফেলেছেন।
ধনী দরিদ্রতার মাপকাঠিতে সংখ্যালঘু নির্ণয় করা যায়, তাছাড়া শিক্ষিত অশিক্ষিত ভিত্তিতেও তা নিরূপণ করা সম্ভব। নারী ও পুরুষের লৈঙ্গিক ভিত্তিতে সমাজে সংখ্যলঘু বা গুরু চিহ্নিত না করা হলেও অলিখিতভাবে তা নিরূপিত হয়ে আছে সংখ্যায় যে যাই হোক না কেন কর্তৃত্ব পুরুষের হাতে।  এ সকল দিক বিবেচনা না নিয়ে কেন ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে সংখ্যালঘু বা সংখ্যা গুরু নির্ধারণে। এটাও যে একটা আন্তর্জাতিক খেলা তা সহজেই অনুমেয়। আন্তর্জাতিক আইনে জাতিসংঘ এই পৃথিবীতে বসবাসরত মানুষকে সংখ্যালঘু হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। জাতিসংঘের ভাষ্যমতে, জাতিগত, নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি যারা কম সংখ্যক মানুষ কোন দেশ বা রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার তুলনায় কম তারাই সংখ্যালঘু। এভাবে মানুষকে সংখ্যালঘু হিসাবে চিহ্নিত করাটা মানুষের মানবাধিকারকে ক্ষুণœ করে। সংখ্যালঘু শব্দটি একটি সাম্প্রদায়িকতার বার্তা বহন করে। আমরা যদি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মোট জনসংখ্যা এবং অঞ্চল ভিত্তিক তার সংখ্যাটার চিত্রটা দেখি যেমন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যা হলো ৭৩০ কোটি। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ বাস করে এশিয়া মহাদেশে অর্থাৎ ৪৪০ কোটি, আফ্রিকায় ১৬ শতাংশ ১২০ কোটি ইউরোপে ১০ শতাংশ ৭৩.৮ কোটি, লাতিন আমেরিকায় ৯ শতাংশ ৬৩.৪ কোটি, উত্তর আমেরিকায় ৫ শতাংশ ৩৫.৮ কোটি, ওশেনিয়ায় দশমিক ৯ শতাংশ  ৯ কোটি। উত্তর আমেরিকা তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অনুপাতে ধর্ম, বর্ণ কিংবা ভাষার নিরিখে সংখ্যালঘু অথচ তারা মহাদাপটে পৃথিবীর বাণিজ্য ও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলা হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যাক্তি কিন্তু পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্রতর অংশের প্রতিনিধিত্ব তিনি করেন। পৃথিবীর দেশে দেশে মানুষের ধর্মপালন অনুসারে যে সংখ্যালঘু আর সংখ্যা গুরু তৈরি করা হয়েছে তা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির একটা কৌশল মাত্র।
সাম্প্রদায়িকতায় ব্যবধান তৈরিতে ধর্মীয় অনুপাতে জনসংখ্যা নির্ণয়ের মাধ্যমে সংখ্যালঘু শব্দটিও যুক্ত হয়েছে। জন্মগতভাবে বাংলাদেশে বসবাসরত সকল মানুষই এদেশের নাগরিক। নাগরিকত্ব¡ পরিচয়ে সবাই সমান। এখানে কেউ সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু নয়, সবারই সম অধিকার রয়েছে এদেশে। তাই কোন ধর্ম ,ভাষা বা বর্ণকে কেন্দ্র করে  মানুষকে  সংখ্যালঘু বিশেষণে আখ্যায়িত করা উচিত নয়।
সংবিধানানুসারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি মালিক এদেশের প্রতিটি নাগরিক। তাই রাষ্ট্রকে হতে হবে ধর্মনিরপেক্ষ। রাষ্ট্র তথা সমাজÑ যদি ধর্মনিরপেক্ষ হয় তাহলে সাম্প্রদায়িক সংঘাত দূর হবে।
লেখক:- কলামিস্ট