সাম্যবাদের স্বপ্নচারীদের নায়ক ফিদেল কাস্ত্রোর জীবনাবসান

আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০১৬, ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক



বিশ্বজুড়ে সাম্যবাদের স্বপ্নচারীদের নায়ক, কিউবা বিপ্লবের নেতা ফিদেল কাস্ত্রো আর নেই।
৯০ বছর বয়সে শনিবার তার জীবনাবসান ঘটেছে বলে কিউবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
কিউবায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর অর্ধশতক কাল দেশ শাসন করে ২০০৮ সালে ক্ষমতা ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রোকে ছেড়ে দিয়ে অবসরে ছিলেন ফিদেল। যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সমাজতান্ত্রিক কিউবা প্রতিষ্ঠাকারী ফিদেল সারাবিশ্বে সমাজতন্ত্রের আন্দোলনকারীদের চোখে ছিলেন বীর।
কিউবার অধিকাংশ মানুষ দেশটি দেশের মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার নায়ক হিসেবে দেখেন ফিদেলকে। অন্যদিকে বিরোধিকারীদের চোখে তিনি হলেন ভিন্নমত দমনকারী।
বাংলাদেশসহ স্বাধীনতাকামী বহু দেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকারীদের কাছেও শ্রদ্ধার পাত্র ফিদেল। বাংলাদেশ সরকার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিন বছর আগে তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায়’ ভূষিত করে। একাত্তরে ফিদেলের অবদান স্মরণ করে তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় ২০০৮ সালে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর প্রকাশ্েয খুব একটা আসতেন না ফিদেল। তবে বেশ কয়েকবার মৃত্যৃ রটনার পর প্রকাশ্য হয়ে জানান দিতেন, তিনি এখনও বেঁচে আছেন।
এ বছর দুই বার প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল তাকে। গত এপ্রিলে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে ভাষণে তিনি নিজের শারীরিক অবস্থার কথা তুলে সমর্থকদের প্রস্তুত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন- “কিছু দিনের মধ্যে ৯০ পার করব, এটা আমি ভাবিনি।”
বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্টদের দুর্দিনের মধ্েয কংগ্রেসে ভাষণে তিনি কিউবাবাসীদের উদ্দীপ্ত করে বলেছিলেন, “কমিউনিজম এখনও প্রাসঙ্গিক, কিউবা বিজয়ীই থাকবে।” এরপর অগাস্টে নিজের ৯০তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসে সবাইকে নিয়ে কেক কেটেছিলেন ফিদেল, দিয়েছিলেন বক্তৃতা।
১৯২৬ সালে কিউবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ওরিয়েন্তে প্রদেশে জন্ম ফিদেলের। সমাজতন্ত্রের আদর্শে দীক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট বাতিস্তা সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের এক পর্যায়ে ১৯৫৩ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল তাকে।
১৯৫৫ সালে মুক্তির পর বন্ধু আরেক কমিউনিস্ট বিপ্লবী চে গেভারাকে নিয়ে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন ফিদেল, উদ্দেশ্য বাস্তিা সরকারকে উৎখাত। ১৯৫৯ সালে তাতে সফল হওয়ার পর কিউবার প্রধানমন্ত্রী হন ফিদেল কাস্ত্রো; কিউবায় সফল হওয়ার পর চে গেভারা পাড়ি জমান অন্য দেশেও একই ধরনের বিপ্লবে, তবে বলিভিয়ায় মারা পড়েন তিনি।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নানা ষড়যন্ত্র রুখে ফিদেল কিউবাকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে মনোযোগী হন। ১৯৭৬ সালে কিউবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন তিনি। প্রায় অর্ধশতক দায়িত্ব সামলানোর পর ২০০৮ সালে ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে প্রেসিডেন্ট পদটি ছেড়ে দিয়ে অবসর কাটাচ্ছিলেন ফিদেল। তবে এর মধ্েযও নিয়মিত লিখতেন তিনি।- বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ