নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত আরও ৫৮ জন উপপরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সোমবার (৪ নভেম্বর) অব্যহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) ইনামুল হক সাগর। তিনি বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ৪০তম ক্যাডেট ব্যাচে প্রশিক্ষণরত ৫৮ জন এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
অব্যাহতির আদেশ কবে হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজকে বলছি মানে এটা আজই হয়েছে।’
এর আগে গত ২২ অক্টোবর প্রথম দফায় ২৫২ জন ও ২৫ অক্টোবর ২য় দফায় ৫৯ জন প্রশিক্ষণার্থীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। মোট ৩৬৯ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
একাডেমি সূত্র জানায়, ২১ অক্টোবর ওই ব্যাচের ১০ জন এসআইকে দ্বিতীয় দফায় শোকজ করা হয়। এরপর ২৪ অক্টোবর তৃতীয় দফায় আরও ৪৯ জনকে শোকজ করা হয়। তিনদিনের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) মো. তারেক বিন রশিদ কারণ দর্শানোর নোটিশে সই করেন।
২৪ অক্টোবর প্রশিক্ষণরত এক এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেমনি মেমোরিয়াল হলে আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারার ওপর প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ক্লাস ছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালে পরিদর্শক পদমর্যাদার চারজন প্রশিক্ষক দেখতে পান, সিটে বসার সময় ওই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একজন প্রশিক্ষক বারবার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসতে বললেও তিনি নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে বসা নিয়ে হইচই করতে থাকেন।
নোটিশে আরও বলা হয়, পাঠদান চলাকালে এই এসআইয়ের ক্লাসে কোনো মনোযোগ ছিল না এবং পাশাপাশি বসে কথা বলছিলেন। এজন্য একজন প্রশিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একাডেমির অধ্যক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাই বিধি অনুযায়ী কেন তাকে চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তা কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে ওই এসআইকে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ২১ অক্টোবর ১০ এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানো নোটিশের একটি কপি পাওয়া গেছে। তাতে বলা হয়, ১৬ অক্টোবর জিমনেসিয়ামে ‘এক্সপেরিয়েন্স শেয়ারিং ইন অর্ডার টু ফেস পলিটিক্যাল এইমড’ বিষয়ে ক্লাস ছিল। সেদিন বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন পুলিশ একাডেমির সাবেক অধ্যক্ষ মো. নজিবুর রহমান। সেদিন এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসেন এবং হইচই করেন। তাকেও তিনদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাসুদুর রহমান ভূঞাকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ একাডেমির তথ্যমতে, ৪০তম ব্যাচের আউটসাইডার ক্যাডেট হিসেবে মোট ৮০৪ জন প্রশিক্ষণরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর এই ক্যাডেট এসআইদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। এই প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ৪ নভেম্বর।