সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের সিংড়ায় একটি বিলুপ্ত প্রজাতির তিলানাগ ঈগল উদ্ধার করে বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। রক্তাক্ত ঈগলটি উদ্ধারের পর গত সাত দিন ধরে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজশাহী বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে পাখিটি হস্তান্তর করেন স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণি পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির, ওয়ার্ডলাইফ সুপার ভাইজার সরোয়ার হোসেন খান, চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, সদস্য প্রভাষক মিজানুর, সাংবাদিক শারফুল ইসলাম খোকন প্রমূখ।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ আগে ঈগলটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে বন বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পরামর্শ ক্রমে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। ঈগলটি সম্পূর্ণ সুস্থ্য না হওয়ায় বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হয়েছে রাতের আধাঁরে কোন পাখি শিকারির হাতে এটি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে।
সুত্রমতে, তিলা নাগঈগল (বৈজ্ঞানিক নাম ঝঢ়রষড়ৎহরং পযববষধ) একটি মধ্যম আকৃতির শিকারী পাখি। এটি এশিয়ার নিরক্ষীয় অঞ্চলে বন্য অবস্থায় পাওয়া যায়। ব্যাপক পরিসরে ভারতীয় উপমহাদেশ, দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ায় এদের বেশ কয়েকটি প্রকরণ পাওয়া যায়।
ইতিপূর্বে, ফিলিপাইন নাগঈগল (বৈজ্ঞানিক নাম: ঝ. যড়ষড়ংঢ়রষধ), আন্দামান নাগঈগল (বৈজ্ঞানিক নাম:ঝ. বষমরহর) এবং দক্ষিণ নিকোবর নাগঈগলকে (বৈজ্ঞানিক নাম:ঝ. শষড়ংংর) তিলা নাগঈগলের উপপ্রজাতি হিসেবে ধরা হয়েছে।
এসকল ঈগলের আছে বড় আকারের মাথা। ঘাড়ে লম্বা পালক থাকায় কেশর এবং ঝুঁটির উপস্থিতি স্পষ্ট দেখা যায়। এদের মুখ উন্মুক্ত, হলুদ ঠোঁট মাংশল অংশের সাথে যুক্ত, শক্তিশালী পাগুলো লোমহীন এবং ঘন আঁইশাকার। এরা বিরাট পাখার উপর ভর করে উঁচু বনের উপর দিয়ে ওড়াওড়ি করে। এদের লেজ প্রশস্ত সাদা এবং কালো দাগযুক্ত। এরা প্রায়ই তীক্ষ্ণ, কর্ণভেদী তীব্র ডাক ডেকে থাকে যা দ্বিত্ব বা তিনটি নোটযুক্ত।
প্রায়ই এরা সাপ শিকার করে খায় যেকারণে এদের সারসিটাস(ঈরৎপধবঃঁং) নামেও পরিচিত করা হয়।
এব্যাপারে রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণি পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, বিলুপ্ত প্রজাতির তিলানাগ ঈগল সাপ শিকার করে জীবন ধারণ করে। বিষাক্ত ও নির্বিশ সব ধরণের সাপ এরা ভক্ষণ করে থাকে।