সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে চড় মেরেছেন মো. এজাজ ওরফে রিক নামে তার এক বখাটে সহপাঠি। গতকাল রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কলেজের ভেতরেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কলেজের সব ক্লাশ স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। জরুরি সভা হয়েছে শিক্ষক পরিষদের।
মানবিক বিভাগের একাদশ প্রথমবর্ষের ওই ছাত্রীর ভাষ্য, সকালে ‘ক’ শাখার শিক্ষার্থীদের অর্থনীতি বিষয়ের ক্লাশ চলছিল। এ সময় বখাটে রিক ক্লাশে বসেই মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। শ্রেণি শিক্ষক বায়েজিদ বোস্তামি তখন ওই ছাত্রের কাছ থেকে মুঠোফোনটি কেড়ে নেন। এরপর তাকে ক্লাশের পেছনে গিয়ে বসতে বলেন।
ক্লাশের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তখন ওই শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন, রিক প্রতিদিনই ক্লাশে বসে মুঠোফোনে কথা বলেন, ফেসবুক চালায়। মেয়েদেরও উত্যক্ত করে। তাদের কথায় সায় মেলান ওই ছাত্রীও। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে রিক।
নগরীর উপকণ্ঠ কাপাশিয়া এলাকার ওই ছাত্রী জানান, সকাল পৌনে ১০টায় ক্লাশ শেষ হয়। এরপর শ্রেণি শিক্ষক প্রথমে বেরিয়ে যান। পেছনে পেছনে শিক্ষার্থীরাও বের হচ্ছিলেন। বখাটে রিক তখন দাঁড়িয়ে ছিলো শ্রেণি কক্ষের দরজার পাশে। ওই ছাত্রী সেখানে যাওয়া মাত্র তাকে সবার সামনেই জোরে একটি চড় মারে রিক। এ সময় তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করা হয়। এরপর রিক পালিয়ে যায়।
তার সহপাঠিরা জানায়, রিক প্রায়ই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কলেজ কর্তৃপক্ষও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তবে গতকাল ওই ছাত্রীকে চড় মারার পর তার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন সব শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়ে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।
জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর নিলুফার পারভীন বলেন, ‘মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে আমাদের কাছে আসে। আমরা সব শুনেছি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কলেজের সব ক্লাশ স্থগিত করা হয়েছে। উভয়পক্ষের অভিভাবককে বিষয়টি জানানোও হয়েছে।’
তিনি জানান, রিকের বাড়ি নগরীর মেহেরচণ্ডি এলাকায়। তার বাবার নাম হাবিবুর রহমান। রিকের এ ধরনের কাণ্ডের পর কলেজের শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা হয়েছে। শিক্ষকরা তাকে কলেজ থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করেছেন। আর এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করার জন্য ভুক্তভোগি ছাত্রীর অভিভাবককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।