সিট বাণিজ্যের অভিযোগে রাবি ছাত্রলীগ কর্মী আটক, মুচলেকা দিয়ে পেলেন ছাড়া

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ৯:৪০ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক


সিট বাণিজ্যের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মাদার বখস হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এঘটনা ঘটে। পরে কেউ বাদী হয়ে মামলা করতে না চাওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ওই শিক্ষার্থীর নাম তৌরিদ কান্তি দাস শিমুল। তিনি ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের পদধারী কেউ না, কিন্তু রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিবের অনুসারী কর্মী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, শনিবারের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বলেন, হলের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা (হলের শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত) রাত ১০টার দিকে শিমুলের বিষয়ে জানতে পারে। এরপর তারা কয়েকজন উনার রুমে গিয়ে খোঁজখবর নেই। তখন জানতে পারে যে, শিমুলের নাম হল গেটে টাঙিয়ে দেওয়া ‘ছাত্রলীগ বা ছাত্রলীগের দোসরদের তালিকায়’ রয়েছে। কিন্তু সে সব অভিযোগ অস্বীকার করে এবং সে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করতে থাকে। এমনকি সে কয়েকটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্র সংগঠনের মেসেঞ্জার গ্রুপে মেসেজ দিয়ে জানায় যে, তার উপর হামলা হচ্ছে। সবাই যেন তাকে বাঁচায়।

এবিষয়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও নির্বাচিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আবু হানজালা বলেন, তার পাশের রুমে থাকা সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি বলেন, ‘তুমি দোষ করেছো, তোমার দোষের ভাগিদার সংগঠন হবে না।’ কিন্তু সে প্রথম থেকেই বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা করতেছিলো। পরে বিষয়টা প্রাধ্যক্ষ স্যারকে জানালে, তিনি তাকে হল ছেড়ে চলে যেতে বলতে বলেন। আমরা তাকে সেটা জানিয়ে চলে আসি। এরপর শুনি সে হল ছেড়ে যায়নি। ফলে, তার রুমের সামনে অনেক শিক্ষার্থী জড়ো হয়। পরে প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষ স্যারসহ হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনেকেই আসেন। তাদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

এবিষয়ে মাদার বখস হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ্ হোসাইন আহমদ মেহ্দী বলেন, অতীতে যারা নিপীড়ক ছিল, ছাত্রদের বক্তব্যমতে, সে নিপীড়কক এবং নিপীড়কের সহযোগী। চাঁদাবাজি এবং ছাত্রদের হল থেকে বের করে দেওয়ার কাজে সে সহযোগিতা করেছে। ছাত্রদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হলের প্র্যাধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সে থানায় আছে। বিষয়টি এখন প্রক্টরের উপর নির্ভর করছে। থানা প্রশাসন প্রক্টরের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছেলেটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ পুলিশ ও হলের ছাত্ররাও কেউ বাদী হতে চায়নি। এই মর্মে সে মুচলেকা দিয়েছে যে, হলে গিয়ে সে নিপীড়ন, সাম্প্রদায়িক উস্কানিসহ শিক্ষার্থীরা যেই অভিযোগগুলো দিয়েছে, সেগুলো সে আর করবে না। ওই ছেলের নামে কোনো মামলা হয়নি, তবে সে আর হলে থাকবে না।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ