সিট বাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর বক্তব্য ফাঁস, তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ণ


রাবি প্রতিবেদক:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে সিট বাণিজ্য নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মীর বক্তব্য ফাঁস হয়েছে। এঘটনা তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগ। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঘটনা তদন্ত করতে দুই সদস্যের কর্মীর বক্তব্য কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আগামী দুই দিনের মধ্যে তাদপর রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের ২ সহ-সভাপতি আবুল বাশার আহম্মেদ ও মনু চন্দ্র মোহন দেব বর্মন।

এর আগে, সিট বাণিজ্য বিষয়ে রাবির শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ছাত্রলীগ কর্মী আল আমিন পিয়াসের কর্মীর বক্তব্য কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ওই অডিওতে পিয়াসের বক্তব্যে সিট বাণিজ্যের প্রমাণ ও টাকা ভাগা-ভাগির কিছু বিষয় উঠে এসেছে।

অডিও রেকর্ডে পিয়াসকে বলতে শোনা যায়, ‘একটা সিটের বিনিময়ে আট হাজার করে দিতে হবে।…এর আগে তো সাত-আট করেই চলত…আমরাও ওই আট (আট হাজার) করে তুলতেছি। কিন্তু তোর সিটের গ্যারান্টি আমি দিব। তোর সম্পূর্ণ দায়ভার আমার। আমরা যে কাজ করব, সেগুলো শিউর সিট।’
এভাবে টাকার বিনিময়ে সিট নিলে ‘সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা লাগবে না’ বলেও প্রতিশ্রুতি দিতে শোনা যায় তাঁকে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রোগ্রাম করতে হবে না। তবে ন্যাশনাল প্রোগ্রামগুলোতে শুধু অ্যাটেন্ড করবি। আমার ক্ষেত্রে যেমন হইছে, আমি টাকা দিয়ে হলে উঠছি। কিন্তু পরে আমাকে পলিটিকস করতে হচ্ছে। তোর ক্ষেত্রে এ রকম হবে না।’

এক পর্যায়ে এই ছাত্রলীগকর্মী বলেন, ‘হলের রুমওয়ার্ক, ছেলেদের প্রোগ্রামে ডাকা এবং কোন সিটগুলো খালি হচ্ছে তা শাকিলের (হলের সাংগঠনিক সম্পাদক) অধীনে তিনিই দেখাশোনা করেন।’
সিট বাণিজ্যের এ টাকার অংশ কয়েক ভাগে ভাগ হয় বলে জানা যায় অডিওর মাধ্যমে। পিয়াস বলেন, ‘শাকিল ভাই টাকা পাবে। আমি পাব না। শাখায় কিছু টাকা যাবে ‘মাল খাওয়ার’ জন্য। তবে শাকিল ভাই শেষে খুশি হয়ে আমাকে কিছু দিতে পারে।’

সিট বাণিজ্যের টাকার অংশ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর কাছে যাবে কি না সেই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাবু ভাই নিজে খাবে না, তার আশপাশের যে ‘চ্যালা’ (অনুসারী) আছে তারা হালকা কিছু রাখবে। আর কিছু শাকিল ভাইয়ের কাছে থাকবে। তবে আমাকেও কিছু দিতে হবে। কারণ ভাই তো একা হল চালাচ্ছে না, আমিও চালাচ্ছি।’

তবে হলগুলোতে সিট বাণিজ্য না করার জন্য শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশনা আছে বলেও স্বীকার করেন আল আমিন পিয়াস। কথার এক পর্যায়ে টাকার বিনিময়ে হলে ওঠার বিষয়টি গোপন রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী পিয়াস বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা ইনফরমেশন। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এগুলো করা হচ্ছে। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে যে আমরা সিট বাণিজ্য করেছি বা টাকার বিনিময় কাউকে তুলেছি, তাহলে যে শাস্তি দেয়া হবে তা মাথা নত করে নেব।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ