সিট বাণিজ্য বিষয়ে ছাত্রের পোস্ট, ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন ছাত্রলীগের

আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪, ১০:৪৬ অপরাহ্ণ


রাবি প্রতিবেদক:ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্য বিষয়ে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন এক ছাত্র। এতে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার দাবি করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছে রাবি শাখা ছাত্রলীগ। রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর আবেদন পত্রটি দেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

আবেদন পত্রে বলা হয়, শনিবার (২৭ জানুয়ারি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এবং বঙ্গবন্ধু হলের ১২০ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র মো. জসিম উদ্দিন ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামক ফেসবুক গ্রুপে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাবি শাখার নামে সিট বানিজ্য ও মারধরের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে পোস্ট করে, যার কোনো সত্যতা নেই। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন, যা আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাবি শাখার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। অতএব, উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক উক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাবি শাখার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার দায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করছি।

এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব বলেন, সে আমাকে এবং রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানেয়াট এবং ভিত্তিহীন দাবি করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গ্রপে স্ট্যাটাস দেয়। এর কিছুক্ষণ পরেই আমি তাকে বঙ্গবন্ধু হলের গেটে ডাকি। সেসময় সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই সে স্বীকার করে যে, সে কাজটি ভুল করেছে।

তিনি আরো বলেন, কিন্তু তার এহেন কাজে রাবি ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। বিশেষ করে আমার বিষয়টা নিয়ে গ্রুপে খুবই বাজে মন্তব্য করেছে সবাই। আপনারা জানেন, আমরা নতুন কমিটি যেদিন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করি, সেদিনই সিট বাণিজ্যের কবর রচনা করি। তারপরও যদি কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পোস্ট করে আমাদের সম্মানহানি করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাবো। এজন্য আমরা আজকেই জসিমের বিরুদ্ধে প্রক্টর দপ্তরে একটি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছি।

উল্লেখ্য, রোববার রাত ৯টার দিকে রাবি পরিবার গ্রুপে জসিম উদ্দিনের ফেসবুক পোস্টটি আর খুজেঁ পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টটি ছড়িয়ে যাওয়ায় তার একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ওই পোস্টে জসিম লিখেছিলেন, ‘আজ (শনিবার) কষ্টে কিছু কথা লিখছি।… বর্তমানে আমার মাস্টার্স ক্লাস চলছে। ৪ ফেব্রুয়ারী আমার আগের ২ রুমমেট ঢাকা চলে গেছে। একজন রুমমেট উর্দু বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের আবাসিক ছাত্রকে উঠিয়ে যায়। যার ঠিক ১৫ দিন পর (৩ সিটের রুম ঐটি) ছাত্রলীগ ৬০০০ টাকা নিয়ে ২০১৮-১৯ সেশনের একজন অনাবাসিক ছেলেকে (পরে আবাসিক করে) ঐ সিটে তোলে এবং অন্য সিট ফাকা
থাকে।

তার কিছুদিন পরেই আমার অন্য রুমমেট তার সিটে একজন আবাসিক ছাত্রকে তুলে দেয়। কিন্তু তাকেও নামিয়ে দিয়ে ছাত্রলীগ ৭৫০০ টাকা নিয়ে অন্য এক ছেলেকে তুলে দেয়। এই ২ সিট নিয়ে আমার রুমে অনেক ঝামেলা হয়। বি.দ্র. মে-২০১৮ সালে আমি অফিসিয়াল ভাবে আবাসিকতা পাই। ২০১৯ এ আর একটা অফিসিয়াল আবাসিকতা দেয় হল কতৃপক্ষ। তার পরে আর কাওকে অফিসিয়াল আবাসিক দেয় নি হল কতৃপক্ষ। তাহলে
কি বঙ্গবন্ধু হলে ছাত্র নেই? আবাসিক ছাত্র নেই? আবাসিক হলে কে থাকে? গরীব ছাত্র নেই? হল কতৃপক্ষ নেই? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেই? সব কিছুই আছে কিন্তু সব অবৈধ পথে ও গায়ের জোরে!

আমার মাস্টার্স ক্লাস চলছে, আমার খালা অসুস্থ থাকার জন্য ৩ দিন রুমে না থাকায় আমার সিটে ছাত্রলীগ শেরে বাংলা হলের ছেলেকে তুলে। যে তুলছে সে (রাব্বি, ২০১৯-২০ সেশন) মাদার বক্স হলের ছাত্র যে কিনা আসাদুল্লা হিল গালিব (সেক্রেটারি) ভাইয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সিট বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। আর যারা সিট বরাদ্দ পাই তারা নিতান্তই গরিব কিন্তু ৭৫০০+ টাকা দেয়ার সক্ষমতা রাখে। পরর্বতীতে জানা যায় তারা পুলিশ, শিক্ষক, ব্যবসায়ির ছেলে। তারা কেউ গরিব না।

গতকাল (শনিবার) রাত ১০ টায় এক ছেলেকে আমার সিটে তুলে দেয় তার পরে ১২ টার পরে আমি রুমে এসে দেখি। সাথে সাথে রাব্বিকে জানায় সে বলেছিল রাত টা থাক সকালে ওকে সরিয়ে নিব। কিন্তু আজ (রোববার) ১২ টা বেজে গেলেও সরায় নি। আমি আবার বলে আসি রাব্বিকে বললো দেখছি। পরে হলে বড় ভাইদের জানায় এবং গালিব ভাইরে বলতে বলেন। আমি গালিব ভাইয়ের রুমে যায় ও না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে এসে ঐ ছেলের জিনিস পত্র রুম থেকে বের করে দি ৫.৩০ টার দিকে। পরে অনেক ঝামেলা করে মিট মাট হয়।

আজ (রোববার) আমাকে নিজের সিট রক্ষা করার জন্য অপমানিত হতে হয়, রাফ গালি শুনতে হয়,মার খেতে হয়, এমন কি নানান হুমকি ও দেয় জুনিয়র ছেলে!! কিছু বলতে গেলে বলে আমি পাগল। সাধারণ ছাত্র কোথায় যাবে? কাকে ভরসা করবে? কিছু হয়ে গেলে কে দায় নিবে? আমরা আর কত দিন কষ্ট করব? অনেক কথা আছে কিন্তু আজ আর লিখবো না।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ