সিন্ধুচুক্তি স্থগিতই থাকবে! পাকিস্তানকে আগে সন্ত্রাসে মদত বন্ধ করতে হবে, স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভারত সরকার

আপডেট: মে ১৩, ২০২৫, ৮:৫৫ অপরাহ্ণ

চন্দ্রভাগা নদীর উপরে বাগলিহার বাঁধ। ছবি: পিটিআই।

সোনার দেশ ডেস্ক:


পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে ভারত। তবে সিন্ধুচুক্তি স্থগিতই থাকবে বলে মঙ্গলবার জানিয়ে দিল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, সীমান্ত-সন্ত্রাসে যত দিন পাকিস্তান মদত দেওয়া বন্ধ না করবে, তত দিন এই চুক্তি স্থগিত থাকবে। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহামলার পরের দিনই পাকিস্তানের সঙ্গে এই চুক্তি স্থগিত করার কথা ঘোষণা করেছিল ভারত। তা আপাতত বহাল থাকছে।

ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে পাকিস্তান এ দেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার চেষ্টা করে। ভারত তা ব্যর্থ করে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে গত শনিবার পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে ভারত। তার পরেই প্রশ্ন উঠেছিল, তবে কি এ বার সিন্ধুচুক্তির উপর যে স্থগিতাদেশ জারি হয়েছিল, তা তুলে নেওয়া হবে? মঙ্গলবার জয়সওয়াল জানিয়ে দিলেন, স্থগিতাদেশ বহাল থাকছে। তাঁর কথায়, ‘‘চুক্তির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল যে, সদিচ্ছা এবং সৌহার্দ্যের আবহেই সিন্ধচুক্তি হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে সীমান্ত-সন্ত্রাসে মদত জুগিয়ে এই চুক্তির নীতিগুলির অপপ্রয়োগ করেছে পাকিস্তান।’’ এর পরেই জয়সওয়াল কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘পাকিস্তান যত দিন না সীমান্ত সন্ত্রাসে মদত জোগানো বন্ধ করছে, তত দিন ভারত এই চুক্তি স্থগিতই রাখবে। ২৩ এপ্রিল এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটি (সিসিএস)। আরও মনে রাখতে হবে যে, জলবায়ুর পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনও নতুন বাস্তব তৈরি করেছে।’’

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। বেশির ভাগই ছিলেন পর্যটক। ভারত সেই ঘটনায় পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলে। যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে। ঘটনার পরের দিনই ১৯৬০ সালে হওয়া সেই চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত বন্ধ না করলে তা স্থগিত থাকবে বলেই জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। সেই সঙ্গে জয়সওয়াল আরও এক বার স্পষ্ট করে দেন যে, পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করার জন্যই ‘অপারেশন সিঁদুর’ করেছে ভারত। পাকিস্তানের সেনাঘাঁটি বা সাধারণ মানুষের যাতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে দিকেও নজর রেখেছে ভারতীয় সেনা। তাই পাকিস্তান যে দাবি করছে, ভারতের অভিযানে তাদের সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, তা আরও একবার খারিজ করেন জয়সওয়াল।

পাকিস্তানি সেনাকর্তা, প্রশাসন বার বার দাবি করেছে, এই সংঘাতে জয়ী হয়েছে তারাই। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘এটা ওদের পুরনো ঢোল। হেরে গেলেও সেই ঢোল বাজায়। ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৯৯ সালে এই ঢোল বাজিয়েছিল তারা।’’ তিনি এ-ও স্পষ্ট করে দেন যে, ১০ মে পাকিস্তানের ডিজিএমওই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করে যোগাযোগ করেছিলেন। তার পরেই যুদ্ধবিরতির ডাক দেয় ভারত। এই নিয়ে পাকিস্তান উল্টো দাবি করলেও তা উড়িয়ে দেন তিনি। এর আগেও ভারতের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, পাকিস্তানই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছিল।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ